সিলেটে মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য রাখার অভিযোগে দোকানে অভিযান

মানহীন, মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য ও দূষিত খাবারের পাশাপাশি বিএসটিআই অনুমোদন ছাড়া পণ্য বিক্রির অভিযোগে সিলেটে ৮ মাসে ৭৫২টি অভিযানে দেড়কোটি টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার অধিদফতর। সিলেট বিভাগীয় ভোক্তা অধিকার কর্তৃপক্ষ জনবল সংকটে থাকলেও চলতি অর্থবছরে (২০২০-২০২১) আট মাসে অভিযান করেছে ৭শ এর বেশি। ভোক্তাদের করা মামলায় জরিমানার প্রায় ২ লাখ টাকা পেয়েছেন ভোক্তারা।

সিলেট বিভাগীয় ভোক্তা অধিকার দফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের (২০২০-২০২১) জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত সিলেট বিভাগীয় ভোক্তা অধিকার অধিদফতর পুরো বিভাগে ৭৫২টি অভিযান চালিয়েছে। এসব অভিযানে ১ হাজার ৬১৩টি প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন শাস্তি ও জরিমানা করা হয়। তাছাড়া ভোক্তাদের করা অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়েছে ১৭৭টি। এর মধ্যে ১৯টি প্রমাণিত হয়েছে। বাকি অভিযোগের কিছু খারিজ করা হয়েছে, আবার কিছু প্রমাণিত হয়নি। পুরো সিলেট বিভাগে জরিমানা আদায় হয়েছে মোট ১ কোটি ৪৫ লাখ ৩৫ হাজার ৭শ টাকা। এর মধ্যে ভোক্তাদের করা অভিযোগে জরিমানার ২ লাখ ৯ হাজার ৬০০ টাকা ভোক্তাদের প্রদান করা হয়েছে।

অধিদফতরের দেওয়া তথ্যমতে, সিলেট মহনগরে সবমিলিয়ে মাত্র ১৬৪টি অভিযান চালিয়েছে দফতরটি। এসব অভিযানে বিভিন্ন অপরাধে ৩২৪টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হয়েছে।

পুরো বিভাগের তুলনায় মহনগরে কম অভিযান চালিয়েছে ভোক্তা অধিকার কর্তৃপক্ষ। তারা জানান, এসব অভিযান চলমান থাকার কথা থাকলেও পর্যাপ্ত জনবল না থাকার কারণে সবসময় অভিযান চালানো সম্ভব হচ্ছে না।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) সিলেটের সভাপতি জামিল চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, সনদ দেওয়ার পর এসব পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে বিএসটিআইয়ের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের তদারকি দেখা যায় না। এ কারণে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সেই সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে। ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করছে মানহীন, মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য ও দূষিত খাবার।

পণ্যের মান ঠিক রাখার পাশাপাশি অভিযান অব্যাহত রাখতে বিএসটিআইয়ের ও ভোক্তা অধিকার দফতরকে আরও দায়িত্বশীল হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

সিলেট বিভাগীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, বাজার মনিটরিংয়ের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত জনবলের অভাব রয়েছে দফতরটিতে। যেখানে একটি জেলার বাজার মনিটরিং করতে কমপক্ষে ১০টি দল কাজ করার কথা সেখানে সিলেট জেলায় রয়েছে মাত্র দুটি টিম। এতো কম জনবল নিয়ে কোনোভাবেই পুরোপুরি মনিটরিংয়ের আওতায় আনা সম্ভব না।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর সিলেটের সহকারী পরিচালক আমিরুল মাসুদ বলেন, একটি জেলার জন্য সবমিলিয়ে কমপক্ষে ৭ জন মানুষের প্রয়োজন। ওই জায়গাতে মাত্র দুইজন দিয়ে পুরো কার্যক্রম চলছে। তার মধ্যে ল্যাব, সরঞ্জামাদি নেই, নেই যাতায়াতের জন্য কোনো সুব্যবস্থা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।

এমআইএইচ