একটি ক্লিনিকে জন্ম নেয় মেরাজ ও আক্তারা দম্পতির প্রথম সন্তান। তবে ক্লিনিকের বিল পরিশোধ করতে না পারায় স্ত্রী-সন্তানকে বাড়িতে আনতে পারছিলেন না রাজমিস্ত্রী মেরাজ আলী। ক্লিনিকের ১২ হাজার ৫০০ টাকা বিল পরিশোধ নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছিল তার। এই অসহায় বাবার পাশে দাঁড়ালেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জোবায়ের হোসেন।

রাজমিস্ত্রী মেরাজ-আক্তারা দম্পতির সন্তান প্রসব বাবদ ক্লিনিকের বিল পরিশোধ করতে না পারার বিষয়টি জানতে পেরে এসি ল্যান্ড বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ক্লিনিকে নবজাতক ও প্রসূতিকে দেখতে যান। এ সময় তিনি তাদের খোঁজ-খবর নেন এবং ক্লিনিকের সম্পূর্ণ বিল পরিশোধ করেন। পরে ক্লিনিক থেকে ছাড় পেয়ে বিকেলে নবজাতকসহ বাসায় ফিরে যান মা আক্তারা।

এর আগে গত শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৬টায় শিবগঞ্জের একটি ক্লিনিকে সন্তান প্রসব করেন আক্তারা খাতুন। বর্তমানে বাড়িতে রয়েছেন তিনি ও তার নবজাতক ছেলে হাসান আলী। রাজমিস্ত্রী মেরাজ আলী শিবগঞ্জ উপজেলার জালমাছমারী এলাকার সাবের আলির ছেলে।

মেরাজ আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি ঢাকায় রাজমিস্ত্রীর কাজ করি। ছেলের জন্ম হবে তাই বাসায় এসেছি। সন্তান জন্মের পরে ক্লিনিকের সাড়ে ১২ হাজার টাকা বিল হয়। তা পরিশোধ করতে না পারায় স্ত্রী-সন্তানকে ক্লিনিক থেকে বাড়িতে আনতে পারছিলাম না। পরে আমার শ্বশুর বিষয়টি শিবগঞ্জ এসি ল্যান্ড স্যারকে জানালে তিনি সশরীরে ক্লিনিকে দেখতে আসেন। তিনি ওই বিল পরিশোধ করেন।

তিনি আরও বলেন, এসি ল্যান্ড স্যারের এই সাহায্যের কথা কোনোদিন ভুলতে পারব না। তিনি পাশে দাঁড়ানোর কারণে স্ত্রী-সন্তানকে ক্লিনিক থেকে বাড়িতে নিয়ে আসতে পেরেছি। পরিবারে সন্তান আগমনের আনন্দ ফিরে আসছে। তবে এখনও ওষুধ কেনার টাকা নিয়ে চিন্তায় আছি। বুধবার বিকেলে এক ফুফাতো ভাইয়ের কাছে টাকা ধার নিয়ে ওষুধপত্র কিনে এনেছি। 

এ বিষয়ে শিবগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বা এসি ল্যান্ড মো. জোবায়ের হোসেন মুঠোফোনে ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত সোমবার দুপুরে অফিসে এসে রাজমিস্ত্রী মেরাজের শ্বশুর বিষয়টি আমাকে জানায়। এ সময় তিনি আর্থিক সহায়তায় জন্য মৌখিকভাবে অনুরোধ করেন। পরে বিষয়টি খোঁজ-খবর নিয়ে নিশ্চিত হই তাদেরকে দেখতে আমি নিজেই ক্লিনিকে যাই। পরে তাদের পুরো বিল পরিশোধ করি। বর্তমানে মা ও নবজাতক দুইজনই সুস্থ আছেন।

জাহাঙ্গীর আলম/আরকে