জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে অফিস সময় সকাল ৯টা থেকে হলেও বেশিরভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী আসেন সকাল ১০টায়। ফলে সেবা থেকে বঞ্চিত হন এলাকার সাধারণ মানুষ।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) জন্য দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী, জরুরি পরিস্থিতি ছাড়া মাঠপর্যায়ের সরকারি চাকরিজীবীদের সকাল ৯টা থেকে ৯টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত অফিস কক্ষে অবস্থান করা বাধ্যতামূলক। তবে এ নির্দেশ মানছেন না উপজেলার সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা।

এ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে বিভিন্ন অফিসে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বেশিরভাগ সরকারি দপ্তরে অফিস সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ছিল তালা বন্ধ। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ও উপজেলা ভূমি কার্যালয় ৯টায় তালা খুললেও ১০টা পর্যন্ত সেখানে ছিল না কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী।‌

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়, উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার কার্যালয়, উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়সহ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সকাল সাড়ে ৯টার পর খুলতে শুরু করে। এসব দপ্তরের বেশিরভাগ কর্মকর্তা সকাল ১০টার পরেও কার্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন। এসব দপ্তরে শুধু তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের সকাল ১০টার পর দেখা গেছে। এতে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এলাকার সাধারণ মানুষ।

উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের অফিস সহায়ক শাহিনুর রহমান সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে বলেন, এখনো কেউ আসেনি, একটু পরে আসবে। স্যার হয়তো মিটিংয়ে আছেন।

সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে সেবা নিতে আসা কাদের মোল্লা নামে একজন বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ দিতে এসেছিলাম। অফিসে কেউ নেই। লিখিত অভিযোগ দিতে পারলাম না। অনেকক্ষণ বসে থাকলাম। পরে জানলাম আজ নাকি কেউ অফিসে আসবে না।

ঘড়ির কাঁটায় ১০টা, তখনও কর্মকর্তা-কর্মচারী নেই উপজেলা যুব উন্নয়ন কার্যালয়ের। উপস্থিত ছিলেন শুধু অফিস সহায়ক মো. আকাশ। তিনি বলেন, এখনো কেউ আসেননি, শুধু আমি এসেছি। কিছুক্ষণ পর হয়তো আসবে।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আসাদুল ইসলাম বলেন, অফিসের চাবি একটা ভেতরে ছিল। এ জন্য একটু লেট হয়েছে। পড়ে অন্য চাবি দিয়ে অফিস খোলা হয়েছে। আমার অফিসের জনবল কম।

উপজেলা যুব উন্নয়ন কার্যালয়ের কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমি ঢাকায় আছি, হেড অফিসে। 

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজাদুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, আমি সদরে মাদরাসায় ছিলাম। কর্মকর্তাদের তো থাকার কথা ছিল।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সেলিম মিঞা বলেন, আমার সাড়ে ৯টায় মিটিং ছিল, এসি ল্যান্ডেরও মিটিং ছিল। আচ্ছা বিষয়টি দেখব।

জামালপুরের জেলা প্রশাসক শ্রাবস্তী রায় বলেন, বিষয়টি জানলাম তবে না দেখে তো মন্তব্য করার সুযোগ নেই। আমি একটা মিটিংয়ে রয়েছি।

আরকে