প্রতিবন্ধী সেলিম

গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ি পৌর এলাকার আন্দুয়া গ্রামের প্রতিবন্ধী কিশোর সেলিম মিয়া (১৬)। হাত পা থেকেও নেই। অন্যের সাহায্য ছাড়া চলতে পারে না, দাঁড়াতে পারে না। জন্মের পর থেকে তার হাত পা বাঁকা। মুখে শুধুই হুম হুম শব্দ করে, কথা বলতে পারে না। হামাগুড়ি দিয়ে ঘুরে বেড়ানোর চেষ্টা করে। ১৬ বছর ধরে এমন কষ্টের জীবন কাটছে তার।

সম্প্রতি পলাশবাড়ির আন্দুয়া গ্রামে গিয়ে দেখা মেলে ওই কিশোরের। ময়লা মাখা কাপড়ে মাটিতে বসে আছে। তার পাশে ছোট ছেলে-মেয়েরা খেলা করছে। মাটিতে বসে অস্পষ্ট কণ্ঠে শুধু হুম হুম করে চিৎকার করছে সেলিম। তার বাবার নাম জসিম উদ্দিন। দারিদ্র্যরতার কারণে ছেলেকে একটা হুইল চেয়ার কিনে দেওয়ার সামর্থ্য নেই তার। ১৬ বছর ধরে হামাগুড়ি দিয়ে চললেও সেলিমের ভাগ্যে জোটেনি একটি হুইল চেয়ার।

সেলিমের বাবা জসিম উদ্দিন দিনমজুর। অভাবের সংসার। অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করেন সেলিমের মা। অসহায় পরিবারটির মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না। সম্প্রতি মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে পেয়েছেন পাকা ঘর। সেখানেই প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে থাকেন তারা।

সেলিমের মা সেলিনা বেগম বলেন, আমরা গরিব মানুষ, দুই বেলা খেতে পাই না। হুইল চেয়ার কিনব কীভাবে। তবে একটা হুইল চেয়ার হলে ছেলেটা স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারত।

প্রতিবেশী মাহদী হান্নান জানান, সেলিম ভাই-বোনদের মধ্যে বড়। সে প্রতিবন্ধী ভাতা পায়। কিন্তু ওর একটা হুইল চেয়ার দরকার।

সেলিমের বাবা জসিম উদ্দিন জানান, আমার নিজের কোনো জমিজমা নেই। দিনমজুরি করে সংসার চলে। ছেলেকে এভাবে দেখতে খুব কষ্ট লাগে। ‌কেমন বাবা আমি ছেলেকে একটি হুইল চেয়ার কিনে দিতে পারি না। তিনি সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দাতা সংস্থাসহ সমাজের বিত্তবান মানুষের কাছে ছেলের জন্য একটা হুইল চেয়ার চেয়েছেন।

রিপন আকন্দ/এমআইএইচ