জেলা আ.লীগের কমিটিতে সাংবাদিক শিমুল হত্যা মামলার প্রধান আসামি’— শিরোনামে গত ২২ ফেব্রুয়ারি একটি সংবাদ প্রকাশ করে জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্ট ডট কম। পরে বিষয়টি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দৃষ্টিগোচর হয়। তারই ধারাবাহিকতায় সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির সদস্য পদ থেকে সাংবাদিক শিমুল হত্যা মামলার প্রধান আসামি ও শাহজাদপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র হালিমুল হক মিরুকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) তাকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুস সামাদ তালুকদার। 

সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুস সামাদ তালুকদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, সাংবাদিক শিমুল হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাবেক মেয়র হালিমুল হক মিরুর নাম সদস্য পদ থেকে কেটে দিয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। তার পরিবর্তে ফিরোজ নামে একজনকে সদস্য করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে জেলা আওয়ামী লীগের কমিটির অনুমোদন হলে হালিমুল হক মিরুর নামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। বিষয়টি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নজরে আসলে তারা কমিটি থেকে তার নামটি বাদ দেন। কারণ তার নামে মামলা চলছে ও চার্জশিট হয়েছে তাই তার কী হবে সেটা বলা যাচ্ছে না। 

প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে অ্যাডভোকেট কে এম হোসেন আলী হাসান ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আব্দুস সামাদ তালুকদারের নাম ঘোষণা করেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান। 

সম্মেলনের প্রায় এক বছর পর গত রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সই করা এক চিঠিতে জেলার ৭৪ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাহী কমিটি ও ২৭ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য পদে স্থান পান সাংবাদিক শিমুল হত্যা মামলার প্রধান আসামি ও সাবেক পৌর মেয়র হালিমুল হক মিরু।

এর আগে, ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন সমকালের শাহজাদপুর উপজেলা প্রতিনিধি আব্দুল হাকিম শিমুল। ঘটনার পর তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও শাহজাদপুর পৌরসভার মেয়র হালিমুল হক মিরুসহ ৪০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন নিহতের স্ত্রী নুরুন্নাহার খাতুন।

ওই বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে হালিমুল হক মিরুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর দুই বছর সাড়ে নয় মাস কারাভোগ করে জামিনে আছেন তিনি। মামলাটি বর্তমানে রাজশাহীর বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন। গ্রেপ্তারের পরপরই দল থেকে মিরুকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। তখন মেয়র পদ থেকেও তাকে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। 

শুভ কুমার ঘোষ/কেএ