কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে গ্রাহকদের প্রায় ২০ কোটি টাকা নিয়ে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং উদ্যোক্তা আলমগীর উধাও হয়ে গেছেন অভিযোগ উঠেছে। খোঁজ মিলছে না তার সহযোগীদেরও। উপজেলার বোর্ড বাজারে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের কার্যালয়টি গত রোববার (১২ মার্চ) থেকে তালাবদ্ধ রয়েছে। গ্রাহকরা গত তিন দিন ধরে সেখানে গিয়ে এজেন্টকে না পেয়ে বিক্ষোভ করছেন।

জানা গেছে, হোসেনপুর উপজেলার হুগলাকান্দি গ্রামের আব্দুল মোতালিব বোর্ড বাজারের এই এজেন্ট ব্যাংকে সাড়ে ১৫ লাখ টাকা জমা রেখেছিলেন। একই গ্রামের আবুল কাসেম রেখেছিলেন ১৪ লাখ টাকা। চর হাজীপুর গ্রামের সৌদি প্রবাসী রতন মিয়ার স্ত্রী রোজিনা আক্তার রেখেছিলেন ২৭ লাখ টাকা। গত তিন দিন ধরে তারা বোর্ড বাজারের ওই এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের কার্যালয়ে আসছেন। কারও স্বামী প্রবাসী, কারও বাবা প্রবাসী, কারও ভাইয়ের শ্রমে ঘামে পাঠানো টাকা ডাচ্-বাংলার এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে জমা করেছিলেন ডিপিএস হিসেবে। কথা অনুযায়ী প্রতি লাখে এক হাজার টাকা করে দিয়েও যাচ্ছিলৈন এজেন্ট আলমগীর। কিন্তু গত রোববার থেকে এজেন্ট উধাও এবং কার্যালয় তালাবদ্ধ রয়েছে।

অভিযুক্ত আলমগীর হুগলাকান্দি গ্রামের মৃত সিরাজ উদ্দিন বেপারীর ছেলে। তার অংশীদার বীর কাটিহারি গ্রামের কেনু মিয়ার ছেলে মানিক মিয়া। ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতেন হুগলাকান্দি গ্রামের রিটন মিয়া। বর্তমানে সকলেই গা ঢাকা দিয়েছেন। তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ।

গ্রাহকদের টাকা জমা রেখে এজেন্ট আলমগীর গ্রাহকদেরকে চেক দিয়েছেন। প্রায় ৮-১০ বছর যাবত এখানে এজেন্ট ব্যাংকিং শুরু করেন আলমগীর। শুরু থেকে অমায়িক আচরণের মাধ্যমে গ্রাহকদের মন জয় করেন তিনি। ধীরে ধীরে ডিপিএসে জমার বিপরীতে প্রতি লাখে এক হাজার টাকা দেওয়ার ফাঁদ পাতেন। এতেই উদ্বুদ্ধ হন গ্রামের সহজ-সরল গ্রাহকরা। এ

হুগলাকান্দি গ্রামের আজিজুল ইসলাম মৃধা জানান, হোসেনপুরসহ আশপাশের প্রায় চার শ গ্রাহকের প্রায় ২০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে গেছেন এজেন্ট আলমগীর ও তার সহযোগীরা। তিনি এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন।

ডাচ্-বাংলা এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের এরিয়া ম্যানেজার রোকন উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, গত সোমবার (১৩ মার্চ) থেকে বোর্ড বাজারের এজেন্টের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এজেন্ট আলমগীর তার ব্যক্তিগত ডকুমেন্ট দিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। অভিযোগ পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে জেনে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এসকে রাসেল/আরএআর