নওগাঁর মহাদেবপুর ভিজিডির চালে ওজন কম পাওয়া গেলেও সেই কম চালই দুস্থদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে দুস্থরা কম চাল পেলেও বিষয়টি তারা জানতেই পারেন নি। খাদ্যগুদাম কর্তৃপক্ষ বলেছেন, তারা ঠিক ওজন দিয়েছেন। আর ইউপি চেয়ারম্যান বলছেন, গুদাম কর্তৃপক্ষের সরবরাহ করা বস্তাভর্তি চালই তারা বিতরণ করছেন।

জানা গেছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালনের দিন বিতরণের জন্য মহাদেবপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) উপজেলা সদরের খাদ্যগুদাম থেকে প্রতিটি ৩০ কেজি ওজনের ২৬৪ বস্তা চাল উত্তোলন করে।

খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি-এলএসডি) পক্ষে চাল খালাস করেন উপ-খাদ্য পরিদর্শক রাশেদুল ইসলাম। একটি ট্রাক্টরযোগে চালের বস্তাগুলো সদর ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স চত্বরে পৌঁছলে সন্দেহবশত একজন সাংবাদিকের অনুরোধে ইউপি সচিব গোলাম রাব্বানী কয়েকটি বস্তা ওজন করলে চাল কম পাওয়া যায়।

বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি গুদাম কর্তৃপক্ষকে সকালে ইউনিয়ন পরিষদ উপস্থিত থাকতে বলেন।

মঙ্গলবার দুপুর গুদাম কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিকের উপস্থিতিতে ইউপি চেয়ারম্যান বস্তাগুলো আবার ওজন করেন। এতে চাল কম পাওয়া যায়। কোনটির বস্তাসহ ওজন পাওয়া যায় ২৯ কেজি ৮৫০ গ্রাম, আবার কোনটির ২৯ কেজি ৯০০ গ্রাম।

গুদাম কর্তৃপক্ষের মতে, চাল ৩০ কেজি ও বস্তার ওজন ৩১৪ গ্রাম। পরিবহনের সময় ঘাটতি হতে পারে সে জন্য আনার সময় প্রতি বস্তায় আরও ১০০ গ্রাম বেশি নেওয়া হয়। এই হিসাব অনুযায়ী প্রতি বস্তায় আধা কেজি চাল কম পাওয়া যায়। ওজন কম পাওয়া গেলেও বিষয়টিকে আমল না নিয়ে চাল দুস্থদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।

উপজেলা সদর খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, গুদাম থেকে ওজন করেই বস্তাগুলো সরবরাহ করা হয়েছে। গুদামের বাইরে গিয়ে ওজন কম পাওয়া গেলে সে দায় তাদের নয়।

মহাদেবপুর সদর ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান ধলু বলেন, ‘খাদ্যগুদাম থেকে উত্তোলন করা বস্তা সরাসরি দুস্থ মায়েদের মধ্য বিতরণ করা হয়।’

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) মহাদবপুর উপজেলা কমিটির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কাজী সামছুজ্জোহা মিলন বলেন, অল্প অল্প করে কম হলেও দীর্ঘদিন ধরে দুস্থ মায়েরা যে চাল কম পাচ্ছেন, তা স্বাভাবিক ঘটনা হতে পারে না। বিষয়টি তদারকির ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

শামীনূর রহমান/এমএসআর