মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে ৪র্থ ধাপে ২৩০ পরিবারের মধ্যে জমিসহ ঘর হস্তান্তরের মাধ্যমে এবার ভূমি ও গৃহহীনমুক্ত জেলা হতে যাচ্ছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ। আগামীকাল ২২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা দেবেন। 

মঙ্গলবার (২১ মার্চ) সকালে এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান জেলা প্রশাসক একেএম গালিভ খান। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। 

এর আগে তিন ধাপে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৫ উপজেলায় ৪ হাজার ৫৮৯টি বাড়ি হস্তান্তর করা হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় ৭৫টি, গোমস্তাপুরে ৭৫টি ও নাচোলে ৮০টি ভূমিহীনকে বাসগৃহ দেওয়া হয়। হালনাগাদ নিরূপিত তালিকা অনুযায়ী পুনর্বাসনযোগ্য কোনো গৃহহীন থাকবে না। এর আগে সম্পন্ন করা হয়েছে ভোলাহাট ও শিবগঞ্জ উপজেলা গৃহহীনদের আবাসন। 

জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, হালনাগাদকৃত চলমান তালিকা অনুযায়ী চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ভূমিহীনমুক্ত হলেও এই প্রক্রিয়া চলমান থাকবে। যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্য কোনো কারণে কোনো ভূমিহীন পাওয়া যায় দ্রুততম সময়ে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে চাঁপাইনবাবগঞ্জকে শতভাগ ভূমি ও গৃহহীনমুক্ত জেলা ঘোষণা করবেন বলে জানান জেলা প্রশাসক একেএম গালিভ খান। প্রধানমন্ত্রীর এই বিশেষ উদ্যোগে জেলার ৪ হাজার ৮১৯ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার ২ শতক জমির মালিকানাসহ টিনশেড পাকা ঘর পাচ্ছেন।

জেলা প্রশাসক একেএম গালিভ খান বলেন, কেউ ভূমিহীন থাকবে না, গৃহহীন থাকবে না-এই সাহস বিশ্বে শুধু বাংলাদেশই করে দেখিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শুধু সাহসই দেখাননি বরং তিনি এটি করে দেখিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু মানুষের মৌলিক প্রয়োজনগুলো মিটিয়ে বাংলাদেশকে একটি সুন্দর রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করতে চেয়েছিলেন। সেই পথ ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাজ করে যাচ্ছেন। 

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্যায়ে জেলার ৫ উপজেলায় ১ হাজার ৩১৯টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে, দ্বিতীয় পর্যায়ে ২ হাজার ৬১৯টি পরিবারকে, তৃতীয় পর্যায়ের ৬৫১ পরিবারকে ইতোমধ্যে জমিসহ ঘর দেওয়া হয়েছে। আগামী ২২ মার্চ চতুর্থ পর্যায়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ২৩০টি পরিবারের মধ্যে জমিসহ ঘর হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। প্রধানমন্ত্রীর উপহারের দুই শতক জমির মালিকানার সঙ্গে এই বাড়িতে থাকছে দুটি করে শোয়ার ঘর, একটি রান্নাঘর, একটি শৌচাগার, বারান্দা, বিদ্যুৎ ও সুপেয় পানির জন্য নলকূপ।

একেএম গালিভ খান বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রতিবন্ধী, ভিক্ষুক, বিধবা, তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীসহ অনেক গৃহহীন আছেন যারা এই ঘরগুলো পেয়েছেন। এটি আনন্দের বিষয়। আশ্রয়ণের ঘরে বসবাসের জন্য সব ধরনের সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। তারা যেন উন্নত জীবনযাপন করতে পারেন। জেলা প্রশাসনের সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি আমরা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি বলে আনন্দিত।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আহমেদ মাহবুব-উল-ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আনিছুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) পাপিয়া সুলতানা, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রওশন আলীসহ জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেগণ এবং জেলায় কর্মরত বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ। 

মো. জাহাঙ্গীর আলম/আরকে