কুমিল্লা বিমানবন্দর চালু হোক চায় না অনেকে
কুমিল্লায় প্রাচীন একটি বিমানবন্দর থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে সেখানে নেই উড়োজাহাজের ওঠানামা। বেশকিছু ঐতিহাসিক পর্যটনকেন্দ্র, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবল টুর্নামেন্ট, কুমিল্লা ইপিজেডসহ কুমিল্লা বিমানবন্দর চালুর জন্য বেশ কয়েকটি যৌক্তিক কারণ রয়েছে। কুমিল্লা শহর থেকে তিন কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত বিমানবন্দরটি চালু হলে জনপদটি আরও সমৃদ্ধ হবে— এমন প্রত্যাশা এ অঞ্চলের মানুষের।
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) ও কুমিল্লা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের তথ্য মতে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় (১৯৪০ সাল) প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বিমানবন্দরটি। প্রতিষ্ঠার পর আন্তর্জাতিক কোনো উড়োজাহাজ ওঠানামা না করলেও ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চালু ছিল। হঠাৎ অজ্ঞাত কারণে বন্ধ হয়ে যায় বিমানবন্দরটি। এরপর অনেক আন্দোলন, মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদানের পর ১৯৯৪ সালে ফের চালু হলেও যাত্রী সংকটে দ্রুত বন্ধ হয়ে যায় এর কার্যক্রম। এরপর দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও আর চালু হয়নি কুমিল্লা বিমানবন্দর।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রায় সাত একর জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত বিমানবন্দরটি এখন অনেকটা ভুতুড়ে পরিবেশে পরিণত হয়েছে। বিশাল মাঠ পড়ে আছে বড় বড় ঘাসের অভয়ারণ্য হয়ে। রানওয়ের পিচ উঠে পাথরের কণা ভেসে উঠেছে। তবে, পরিবেশ কিছুটা ভুতুড়ে হলেও সচল রয়েছে ডিভিওআর ও ডিএমই-এর সিগন্যাল। প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ বিভিন্ন দেশের ২৫-৩০টি বিমান প্রাত্যহিক এসব সিগন্যাল ব্যবহার করছে। ফলে প্রতি মাসে দুই থেকে আড়াই কোটি টাকার রাজস্ব আয় হচ্ছে সরকারের।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় (১৯৪০ সাল) প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বিমানবন্দরটি। প্রতিষ্ঠার পর আন্তর্জাতিক কোনো উড়োজাহাজ ওঠানামা না করলেও ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চালু ছিল। হঠাৎ অজ্ঞাত কারণে বন্ধ হয়ে যায় বিমানবন্দরটি। এরপর অনেক আন্দোলন, মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদানের পর ১৯৯৪ সালে ফের চালু হলেও যাত্রী সংকটে দ্রুত বন্ধ হয়ে যায় এর কার্যক্রম। এরপর দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও আর চালু হয়নি কুমিল্লা বিমানবন্দর
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লা বিমানবন্দরটির রানওয়ের দৈর্ঘ্য সাড়ে পাঁচ হাজার ফুট, প্রস্থ ১৫০ ফুট। যা অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচলের জন্য উপযুক্ত। এ বিমানবন্দরে বর্তমানে শুধু সিগন্যাল ব্যবহার করা হলেও এতে কর্মরত রয়েছেন ২৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী।
বিজ্ঞাপন
কুমিল্লা বিমানবন্দরের একেবারে কাছাকাছি স্থাপন করা হয় আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার। যা থেকে প্রতি মুহূর্তে বার্তা নিয়ে বৈমানিকগণ উড়োজাহাজ চালাতেন। বিমানবন্দরটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ হয়ে থাকলেও আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারটি এখনও সচল রয়েছে। ফলে, বিমানবন্দরটি চালু করা হলে প্রতি মুহূর্তের আবহাওয়ার তথ্য পাওয়া সম্ভব।
সম্প্রতি বন্ধ হয়ে থাকা দেশের সাতটি বিমানবন্দর আবারও চালু করার ঘোষণা দিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। সেগুলো চালু করার কাজও চলছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। ওই তালিকায় রয়েছে কুমিল্লা বিমানবন্দরও। বিমানবন্দর চালুর ঘোষণার পর এ জনপদের মানুষের মধ্যে বেশ উদ্দীপনা লক্ষ করা গেছে। বেবিচকের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন এ অঞ্চলের নিয়মিত বিমানযাত্রী, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, শিক্ষক, সুশীল সমাজসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এদিকে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট থেকে পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড ও সুয়াগাজী এবং শহরতলীর শাসনগাছা, কান্দিরপাড়, বাগিচাগাঁও ও রাজগঞ্জ এলাকা মিলিয়ে মোট ১৫০-১৮০টি আবাসিক হোটেল রয়েছে। যার অনেকগুলোতে ভিআইপি সুবিধা রয়েছে।
কুমিল্লার পর্যটনকেন্দ্রগুলোর মধ্যে শালবন বিহার, ময়নামতি জাদুঘর, ওয়ার সিমেট্রি (যুদ্ধসমাধি), নওয়াব ফয়জুন্নেসার বসতভিটা, কোটবাড়ি, ধর্মসাগর, গোমতী নদীর পাড়ে দৃষ্টিনন্দন অসংখ্য রিসোর্ট, লালমাই পাহাড়, উপমহাদেশের প্রখ্যাত সংগীতজ্ঞ শচীন দেববর্মণের বাড়ি, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতিবিজড়িত স্থান, রাজেশপুর ইকোপার্কসহ বেশকিছু পর্যটনকেন্দ্র উল্লেখযোগ্য। কুমিল্লা বিমানবন্দর চালু হলে এসব পর্যটনকেন্দ্রের বিকাশ ঘটবে। দেশী পর্যটকদের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনা কয়েকগুণ বেড়ে যাবে— এমন প্রত্যাশা স্থানীয়দের।
রাকিবুল হাসান লিমন নামের এক বিমানযাত্রী ঢাকা পোস্টকে বলেন, কুমিল্লা বিমানবন্দর চালু হলে আমাদের জন্য অনেক ভালো হবে। এটি একটি সমৃদ্ধ জনপদ। সরকার কুমিল্লা বিমানবন্দর চালু করার যে ঘোষণা দিয়েছে সেটাকে সাধুবাদ জানাই। যত দ্রুত সম্ভব কুমিল্লা বিমানবন্দরটিতে কার্যক্রম চালু করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
কুমিল্লার পর্যটনকেন্দ্রগুলোর মধ্যে শালবন বিহার, ময়নামতি জাদুঘর, ওয়ার সিমেট্রি (যুদ্ধসমাধি), নওয়াব ফয়জুন্নেসার বসতভিটা, কোটবাড়ি, ধর্মসাগর, গোমতী নদীর পাড়ে দৃষ্টিনন্দন অসংখ্য রিসোর্ট, লালমাই পাহাড়, উপমহাদেশের প্রখ্যাত সংগীতজ্ঞ শচীন দেববর্মণের বাড়ি, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতিবিজড়িত স্থান, রাজেশপুর ইকোপার্কসহ বেশকিছু পর্যটনকেন্দ্র উল্লেখযোগ্য। কুমিল্লা বিমানবন্দর চালু হলে এসব পর্যটনকেন্দ্রের বিকাশ ঘটবে। দেশী পর্যটকদের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনা কয়েকগুণ বেড়ে যাবে— এমন প্রত্যাশা স্থানীয়দের
জয়নাল আবেদীন নামের সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী ও সংগঠক ঢাকা পোস্টকে বলেন, আইনের কাজে আমাকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভ্রমণ করতে হয়। সড়কে অধিকাংশ সময় প্রচণ্ড যানজট থাকে। এছাড়া প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। কুমিল্লা বিমানবন্দরটি চালু হলে আমাদের ভ্রমণ যেমন নিরাপদ হবে, তেমনি যাত্রার সময়ও অনেক কমে যাবে।
কুমিল্লা কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ হুমায়ূন কবির মাসউদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, কুমিল্লায় অসংখ্য পর্যটনকেন্দ্র আছে। এসব পর্যটনকেন্দ্রে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রচুর দর্শনার্থী আসেন। পাশাপাশি গবেষণার কাজে প্রচুর বিদেশি গবেষকও আসেন। এছাড়া কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচুর বিদেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। সবদিক বিবেচনায় কুমিল্লা বিমানবন্দরটি চালু হওয়া জরুরি।
কুমিল্লা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, কুমিল্লা বিমানবন্দর চালুর ঘোষণায় খুব খুশি হয়েছি। বিমানবন্দরটি চালু হলে আমাদের বাস-মিনিবাস শ্রমিকদের ক্ষতি হবে না বরং লাভ হবে। বিমানবন্দরটি চালু হলে আশপাশের জেলা থেকে অনেক মানুষ গণপরিবহন ব্যবহার করে আসবে। তাতে আমাদেরই লাভ হবে।
‘আরএস ট্রাভেলস’ নামের একটি ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবস্থাপক ঢাকা পোস্টকে বলেন, কুমিল্লা বিমানবন্দর চালু হলে কুমিল্লা ও এর আশপাশের মানুষ কুমিল্লামুখী হবে। এতে কুমিল্লার ট্রাভেল এজেন্সিগুলোও লাভবান হবে।
কুমিল্লা চেম্বার অব কমার্সের সহসভাপতি জামাল আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা ব্যবসায়ীরা দ্রুত সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছাতে চাই। সেজন্য আমাদের এ বিমানবন্দর চালু করা প্রয়োজন। সবচেয়ে বড় কথা হলো আমাদের কুমিল্লায় একটি ইপিজেড রয়েছে। সেখানে দেশ-বিদেশের বায়ার ও ব্যবসায়ীরা আসেন। কিন্তু যাতায়াতের সমস্যার কারণে তারা কিছুটা বিনিয়োগ-বিমুখ। কুমিল্লা বিমানবন্দরটি চালু হলে এ ইপিজেডে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে বলে মনে করি। সম্প্রতি বেবিচক যে ঘোষণা দিয়েছে কুমিল্লা চেম্বার অব কমার্সের পক্ষ থেকে সাধুবাদ জানাই।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশের অংশ হিসেবে কুমিল্লা বিমানবন্দর চালু হবে, এটা বিভিন্ন সূত্রে জেনেছি। আমাকে ইতোমধ্যে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কর্মরত একজন বলেছেন, কুমিল্লা বিমানবন্দরে তিনজনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। এ থেকে নিশ্চিত হয়েছি কুমিল্লা বিমানবন্দরটি আবারও চালু হবে। এটি চালু হওয়া জরুরি। শুধু কুমিল্লা নয়, এটি চালু হলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুরসহ নোয়াখালী জেলার মানুষও এর সুবিধা ভোগ করবে। এ অঞ্চল রেমিট্যান্সের একটি উর্বর জায়গা। তাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গিয়ে ফ্লাইট ধরতে এ বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারবে ছয় জেলার মানুষ। তাছাড়া মানুষ এখন সচ্ছল। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যেতে বিমান ব্যবহার করেন।
কাজী মাহবুবুর রহমান নামের কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের এক কাউন্সিলর ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা ছোটবেলা থেকেই শুনে এসেছি কুমিল্লায় বিমানবন্দর আছে। কিন্তু এর কার্যক্রম দেখিনি। সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে খবর পড়ে জানলাম কুমিল্লা বিমানবন্দরটি চালু হবে। যদি এটি চালু হয় তাতে মানুষ উপকৃত হবে। বেবিচকের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।
কুমিল্লা বিমানবন্দরের সিএনএস প্রকৌশলী নাসির উদ্দীন আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, কুমিল্লা বিমানবন্দরের প্রায় সবকিছু ঠিক আছে। এখানে দৈনিক ২৫-৩০টি বিমান ডিভিওআর ও ডিএমই সিগন্যাল ব্যবহার করে। যা থেকে সরকারের মোটা অঙ্কের রাজস্ব আয় হচ্ছে। বিমানবন্দরটি চালু করতে হলে এখন শুধু রানওয়েটা কার্পেটিং করতে হবে। পাশাপাশি ফায়ার বিগ্রেড, এয়ারক্রাফটের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য টাওয়ারে বিএইচএফ সেট করার প্রয়োজন হবে। এগুলো হলেই বিমানবন্দরটি থেকে অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান চলাচলে আর বাধা থাকবে না।
কুমিল্লা বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক মো. তৌহিদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, কুমিল্লা বিমানবন্দরটি সরকারের একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান। বিমান ওঠানামা না করলেও এটা থেকে ভালো রাজস্ব আয় হচ্ছে। কুমিল্লা বিমানবন্দর চালু হলে সরকারের লাভ হবে বলে মনে করি। বিমানবন্দরটি চালু করতে ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা নেই। তবে, এক একরের মতো জায়গা কুমিল্লা ইপিজেডের সীমানা প্রাচীরে ঢুকে গেছে। পাশাপাশি বিমানবন্দরের একেবারে কাছেই আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার। আবহাওয়ার সকল তথ্য জানাতে তারাও সক্ষম।
তবে বিমানবন্দরটি চালু হবে কি, হবে না— সেটি আমার পক্ষে জানানো সম্ভব নয়। এটা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবে, বলেন তিনি।
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, কুমিল্লা বিমানবন্দরটি দীর্ঘদিন অব্যবহৃত ছিল। সম্প্রতি জেনেছি বিমানবন্দরটি আবারও চালু হবে। কুমিল্লা একটি সমৃদ্ধ জনপদ। এ জনপদের চলার পথকে গতিশীল করতে বিমানবন্দর প্রয়োজন। আমার সঙ্গে বেবিচকের তিনজন প্রকৌশলী ইতোমধ্যে যোগাযোগ করেছেন। আশা করছি কুমিল্লা বিমানবন্দরটি আবারও চালু হবে।
বেসরকারি সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) কামরুল ইসলাম বলেন, বন্ধ হয়ে থাকা দেশের অভ্যন্তরীণ রুটের সাতটি বিমানবন্দরের মধ্যে কুমিল্লা একটি। এসব বিমানবন্দর চালু হলে ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও ভালো হবে। একটি বিমানবন্দর চালু হলে অনেক সম্ভাবনা তৈরি হয়। এখানে ব্যবসা-বাণিজ্যের গতি বাড়বে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যদি নতুন কোনো বিমানবন্দর চালু করা হয় অবশ্যই ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস সেখানে ফ্লাইট চালু করবে। শুধু ইউএস-বাংলা নয়, বাংলাদেশের যতগুলো এয়ারলাইনস আছে আমার মনে হয় দেশের মানুষকে সেবা দেওয়ার জন্য সবাই প্রস্তুত।
তবে, যাত্রী ভোগান্তির কথা উল্লেখ করে বিমানবন্দর চালুর বিপক্ষেও মতামত দিয়েছেন কুমিল্লার কয়েকজন সংসদ সদস্য। কুমিল্লা-৬ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার ঢাকা পোস্টকে বলেন, বর্তমানে কুমিল্লা থেকে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক উন্নত। মাত্র এক থেকে দেড় ঘণ্টায় ঢাকা যাওয়া সম্ভব। ধরেন, আমি কুমিল্লায় যাব। ঢাকা বিমানবন্দরে আমাকে এক ঘণ্টা আগে রিপোর্ট করতে হবে। ফ্লাইং টাইম ২০ মিনিট, ওয়েটিংয়ে এক ঘণ্টা। আরও লাগবে ৪০ মিনিট। অর্থাৎ মানুষের নষ্ট হয়ে যাবে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা। অথচ আপনি দেড় ঘণ্টায় কুমিল্লায় পৌঁছাতে পারছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কুমিল্লার আরও একজন সংসদ সদস্য ঢাকা পোস্টকে বলেন, উড়োজাহাজে যাতায়াতে মানুষের সময় বেশি নষ্ট হবে। কেননা, ফ্লাইং টাইম কম হলেও প্রক্রিয়ার যত ভোগান্তি, সেগুলোও বিবেচনায় রাখতে হবে।
উল্লেখ্য, কুমিল্লা থেকে রাজধানী ঢাকার দূরত্ব ৯৭ কিলোমিটার। জেলা সদর থেকে ঢাকায় যেতে রয়েছে অনেকগুলো পরিবহনের এসি, নন-এসি বাস এবং বেশকিছু ট্রেন।
এমজেইউ