বাবা রুবেল হোসেন কৃষি কাজ করে যা উপার্জন করেন তা দিয়ে কোনোমতে সংসার চলছিল। তাই বাবাকে সহযোগিতা করতে পড়াশোনার পাশাপাশি অন্যের ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ভাড়া নিয়ে সংসারের হাল ধরেছিলেন কলেজছাত্র মানিক হোসেন (২০)।

শনিবার (২৫ মার্চ) সকালে মানিককে অচেতন করে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকটি নিয়ে গেছে ছিনতাইকারীরা। মানিক এখন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি। এখনও জ্ঞান ফেরেনি তার।

জানা যায়, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর বাজার থেকে এক যাত্রীর অনুরোধে ইজিবাইক নিয়ে চুয়াডাঙ্গা আদালত চত্বরে আসেন মানিক। সেখানে পুলিশ পরিচয়ে যাত্রীবেশে আরও একজন যোগ দেন। এরপরই তারা চেতনানাশক ওষুধে ভেজানো রুমাল নাকে চেপে ধরে অজ্ঞান করে মানিককে। আদালত চত্বরের পাশেই ঝিনুক মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে অচেতন অবস্থায় মানিককে ফেলে রেখে ইজিবাইকটি নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। পরে স্থানীয়রা মানিক হোসেনকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

মানিক হোসেন দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর গ্রামের মাঝেরপাড়ার রুবেল হোসেনের ছেলে। তিনি দামুড়হুদা আব্দুল ওদুদ শাহ ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র।

হাসপাতালে মানিকের শয্যাপাশে থাকা তার মা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার স্বামী মাঠে কৃষি কাজ করেন। এতে চার সদস্যের পরিবার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে মানিক পড়াশোনার পাশাপাশি অন্যের ইজিবাইক ভাড়া নিয়ে যা উপার্জন করতো তাই দিয়ে টেনেটুনে চলে। আজ সকালে বাড়ি থেকে বের হয়েছিল মানিক। এখন শুনছি তাকে অজ্ঞান করে ভাড়ার ইজিবাইকটিও তারা নিয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা খুবই দরিদ্র। একদিন কাজ না করলে সংসার চলে না আমাদের। আর এখন আমরা এই ইজিবাইক মালিককে কী জবাব দেব বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. নুরজাহান রুমি ঢাকা পোস্টকে বলেন, তিনি অস্পষ্টভাবে কথা বলছেন। বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন। ধারণা করা হচ্ছে চেতনাশক জাতীয় কোনো ওষুধের মাধ্যমে তাকে অচেতন করা হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ভর্তি করে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তবে তিনি শঙ্কামুক্ত কিনা এখনি বলা যাচ্ছে না।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, হাসপাতালে গিয়ে খোঁজখবর নিয়ে তারপর বিষয়টি জানাব।

আফজালুল হক/এমএএস