শেরপুর শহরের পিচঢালা সড়কের দুই পাশে দীর্ঘ দেয়ালে ঘেরা কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (এটিআই) ফসলের খেত। নানা জাতের ফসল চাষ করা হয় সেখানকার বিস্তীর্ণ জমিতে। জেলা শহর থেকে সদর হাসপাতালের দিকে প্রধান সড়ক থেকে একটু ভেতরে গেলেই সবুজ ভূমিতে চোখ জুড়িয়ে যায়। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে সেখানে সবুজ-বেগুনি ধানের চারা লাগিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে জাতীয় পতাকা। শাক-সবজিতে রয়েছে মানচিত্র আর স্মৃতিসৌধ।

ইনস্টিটিউট শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মিলিত প্রচেষ্টায় ফুটে উঠেছে চোখ জুড়ানো এই চিত্রকর্ম। স্বাধীনতা দিবসের মাসকে রাঙ্গাতে শিক্ষার্থীদেরকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতেই এই প্রচেষ্টা বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা। এমন এক অনন্য শস্য চিত্র দেখতে সেখানে ভিড় করছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। 

শেরপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (এটিআই) অধ্যক্ষ সাইফুল আজম খান জানান, এটিআই'র প্রায় ৪০ একর জমির বিশাল এলাকায় ধান ও সবজির প্রদর্শনী প্লট রয়েছে। স্বাধীনতার মাসের গুরুত্ব সকলের মাঝে তুলে ধরতে ধান ও সবজির প্লটে সবার দৃষ্টি কাড়ে এমন এক বিশাল পতাকা, মানচিত্র ও স্মৃতিসৌধ করা হয়েছে। ধান খেতের ক্যানভাসে ১৬০ ফিট দৈর্ঘ, ৯৬ ফুট প্রস্থ ও ৩২ ফুট বৃত্তের ব্যাসার্ধের জাতীয় পতাকা তৈরি করা হয়েছে। 

তিনি আরও জানান, পতাকার সবুজ অংশ বঙ্গবন্ধু-১০০ ও হাইব্রিড এবং মাঝখানের লাল বৃত্তের অংশ দুলালী সুন্দরী ধানের চারা দিয়ে সাজানো হয়েছে। পতাকার সবুজ অংশ দিয়ে বোঝানো হয়েছে বাংলার প্রকৃতিকে আর মাঝখানে লাল বৃত্ত দিয়ে বোঝানো হয়েছে লক্ষ শহীদের রক্ত এবং পাশেই সবজির প্লটে লাল শাক ও পাট শাকের চারা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বাংলাদেশের মানচিত্র ও স্মৃতিসৌধ। 

ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম জিহান বলেন, আমাদের কলেজে এতো সুন্দর একটি পতাকা, মানচিত্র ও স্মৃতিসৌধ করতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত। কৃষির মাধ্যমে দেশকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সবার মাঝে। অনেকেই দেখতে আসছেন। এমন সৃজনশীল কাজ দেখে খুশি হচ্ছেন এবং আমাদের প্রশংসা করছেন।

স্থানীয় কবি ও সাহিত্যিক আব্দুল আলীম বলেন, কলেজের শিক্ষক ও ছাত্ররা মিলে এমন একটি কাজ করেছে যা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। এখানে আমাদের দেশকে জাতির সামনে তুলে ধরেছে তারা। আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এভাবেই সব কিছু করে দেখাতে হবে। 

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুকে জানতে এমন উদ্যোগের প্রশংসা করে সরকারদলীয় হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিউর রহমান আতিক বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েদের সত্যিকারের ইতিহাস জানতে হবে। বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধকে জানাতে এখানে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এতে আমি তাদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল পেয়েছি। এবার আমাদের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে।

উবায়দুল হক/এমএএস