৪৪ বছর আগে পা হারানো ইসমাইল বেপারী (৮৪) চলাফেরা করেন স্ক্র্যাচে ভর দিয়ে। এ অবস্থায় ছেলের মারধরের বিচার চাইতে রোববার (২৬ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে পুত্রবধূ নিপা আক্তারকে নিয়ে টঙ্গিবাড়ী থানায় আসেন তিনি। পরে তিনি বাদী হয়ে ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। 

ইসমাইল বেপারী টঙ্গিবাড়ী উপজেলার ডুলিহাটা গ্রামের বাসিন্দা। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, তার ছেলে শরিফুল ইসলাম সকাল সাড়ে ৮টার দিকে জমিতে আলু তুলছিলেন। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একই গ্রামের পিরু মোল্লার ছেলে নজু মোল্লা (৩০), তোতা মোল্লা (২৫) ও আঃ হাই বেপারীর ছেলে শাহিন বেপারী (২২) শরিফুলকে মারধর করে জমিতে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে তাকে আহত অবস্থায়  উদ্ধার করে টঙ্গিবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ব্যাপারে আহতের স্ত্রী নিপা আক্তার বলেন, আমার স্বামীকে মারধর করে আলু জমিতে ফেলে রেখে চলে যায় ওরা। পাশে জমিতে কাজ করতে থাকা লোকজন আমার স্বামীকে উদ্ধার করে বাড়ির সামনে দোকানে নিয়ে আসলে আমরা সবাই দৌড়ে যাই। পরে তাকে টঙ্গিবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি।

এ ব্যাপারে বৃদ্ধ ইসমাইল বেপারী বলেন, আমি একা চলাফেরা করতে পারি না। ৪৪ বছর আগে পায়ে লম ফোড়া হয়েছিল। তারপরে ডাক্তার ডান পা কেটে ফেলে। এখন কাজকর্ম করতে পারি না। ছেলেরা দেখাশুনা করে। আজ ছেলেকে মেরে জমির মধ্যে ফেলে রেখেছে ওরা। বাধ্য হয়ে নিজেই কাটা পা নিয়ে স্ক্র্যাচে ভর করে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে থানায় আসছি। অভিযোগ দায়ের করলাম। পুলিশ বলছে রাতে ওসি সাহেব অভিযোগ দেখে পরে পুলিশ পাঠাইবে। আমি বিচার চাই।

তিনি আরও বলেন, আমার ছেলে এ বছর ১২ ঘণ্টা (৮৪ শতাংশ) জমিতে আলু লাগাইছে। আমার নিজের কোনো জমি নেই। ঋণ করে অন্যের জমি লিজ নিয়ে আলুগুলো লাগাইছিল। কয়দিন যাবৎ বৃষ্টি হচ্ছে। এখন আলুগুলো উঠাইতে না পারলে আরও বৃষ্টি হইলে পচেঁ নষ্ট হয়ে যাইবো। ছেলে হাসপাতালে। আমি ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারি না। জমি থেকে আলু তুলবো কে?

এ ব্যাপারে টঙ্গিবাড়ী থানা পুলিশের ডিউটি অফিসার এসআই সৈকত বলেন, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ব.ম শামীম/এমএএস