নেত্রকোণার কেন্দুয়ার পৌরশহরের সায়মা শাহজাহান একাডেমির দশম শ্রেণির ছাত্র শরীফ। বাবা শহীদুল ইসলাম একজন চা বিক্রেতা, মা গৃহিণী। একমাত্র ছেলেকে নিয়ে মা-বাবার স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া করে শরীফ একদিন মানুষের মতো মানুষ হবে, তাদের অভাবের সংসারে সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনবে। 

কিন্তু শরীফ আজ ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিছানায় শুয়ে দুঃস্বপ্নে দিন কাটাচ্ছে। আর ছেলের শয্যার পাশে বসে চোখের জল ফেলছেন তার মা রোজিনা আক্তার।

অসহায় এই মায়ের প্রশ্ন- শরীফ কী আর কোনোদিন স্কুলে গিয়ে তার সহপাঠীদের সঙ্গে লেখাপড়া ও খেলাধুলা করতে পারবে? 

শরীফের বাবা কেন্দুয়া পৌরশহরের দিগদাইর গ্রামের বাসিন্দা শহীদুল ইসলাম বলেন, প্রথমে শরীফের একটি চোখে সমস্যা দেখা দেয়। পরে তাকে কিশোরগঞ্জে নিয়ে গিয়ে চোখের চিকিৎসা করালে চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও সার্জন অধ্যাপক ডা. মো. আমিনুল হক আকন্দ আমার ছেলের চোখসহ মাথায় বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন এবং শরীফের ব্রেন টিউমারের বিষয়ে পরিবারের লোকজনকে জানান। 

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি শরীফকে ময়মনসিংহ নিয়ে গিয়ে ব্রেন ও স্পাইন বিশেষজ্ঞ ড. মো. হারুন অর রশিদের নির্দেশনায় উন্নত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হলে শরীফের ব্রেন টিউমারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। পরে গত ১ মার্চ শরীফকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

শহীদুল ইসলাম আরও বলেন, ডাক্তার বলেছেন শরীফের ব্রেন টিউমার। চিকিৎসা করাতে অনেক টাকার প্রয়োজন। আমরা গরিব অসহায় মানুষ। এতো টাকা কোথায় পাব? তাই একমাত্র ছেলেকে বাঁচাতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি।

শরীফের মা রোজিনা আক্তার বলেন, শরীফ বাঁচতে চায়। তার ইচ্ছা এসএসসি পাস করে ভালো একটা কলেজে ভর্তি হবে। কিন্তু ছেলের মাথায় ব্রেন টিউমার দেখা দেওয়ায় এখন তার লেখাপড়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এই চিকিৎসায় অনেক টাকা লাগে। ছেলের বাবা চা বিক্রি করে যে টাকা পায় তা দিয়ে সংসার চালানোই কঠিন। তার উপর ছেলের চিকিৎসা সব মিলিয়ে আমরা চরম হতাশার মধ্যে আছি।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে রোজিনা আক্তার বলেন, সমাজের বিত্তবান দানশীল মানুষদের কাছে আর্থিক সহযোগিতার জন্য অনুরোধ করছি। সবাই সহযোগিতা করলে উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে হয়তো আমার ছেলে সুস্থ হয়ে যাবে। আবার লেখাপড়া করে আমাদের স্বপ্ন পূরণ করবে।

জিয়াউর রহমান/আরকে