মালয়েশিয়ায় যাচ্ছে দিনাজপুরের আলু
দেশের সীমানা পেরিয়ে এখন বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার আলু। ফসলের মাঠ থেকে সরাসরি আলু রপ্তানি হওয়ায় ব্যস্ততা বেড়েছে কৃষক, শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের। চলতি মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে আলুর দাম কিছুটা কম থাকলেও এখন দাম বাড়ায় লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।
জানা গেছে, চলতি মৌসুমে বীজ, সার ও কীটনাশকের পর্যাপ্ত সরবরাহ এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। বর্তমানে দেশ ও দেশের বাইরে আলুর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে।
বিজ্ঞাপন
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর ২ হাজার ২৬০ হেক্টর জমিতে ৫০ হাজার মেট্রিক টন আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার মধ্যে প্রায় ১০ হাজার টন আলু বিদেশে রপ্তানি করার লক্ষ্য নিয়ে দ্বিতীয় বছরের মতো কাজ করছে কৃষি বিভাগ। ইতোমধ্যে একশ টন আলু রপ্তানি হয়েছে। এই উপজেলার সাগিতা, গ্রানুলা, সানসাইন, কুমরিকা, সেভেন জাতের আলু মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানির কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
হোসেনপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল আলীম বলেন, কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় প্রায় শতাধিক কৃষক বিদেশে আলু রপ্তানি করছেন। জমি থেকে প্রতি কেজি আলু ১৪ থেকে ১৫ টাকা দরে বিদেশে রপ্তানি করছেন চাষিরা। এবার আলুর দাম বেশি পেয়ে আমরা বেশ খুশি।
বিজ্ঞাপন
কৃষক মতিউর রহমান বলেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। আগের বছরগুলোতে আলু তোলার সময় দাম না পেলেও এবার আলুর দাম রয়েছে, কারণ এবার আমাদের আলুগুলো বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। এতে আমরা বেশ লাভবান হচ্ছি।
কৃষক সাইদুর রহমান বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে এবার তিন বিঘা জমিতে আলু লাগিয়েছি। আলুর ফলন মোটমুটি ভালো হয়েছে। প্রথম আমাদের আলুগুলো ১০ টাকা কেজি দরে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেছি। পরে এক ব্যবসায়ীর মাধ্যমে সেই আলু ১৫ টাকা কেজি দরে বিদেশ পাঠিয়েছি। এবার আলুতে বেশ লাভ করছি। আগামী বছর আরও বেশি পরিমাণে আলু লাগানোর পরিকল্পনা করছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বাসুদেব রায় বলেন, এই উপজেলার মাটি আলু চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় ফলন ভালো হয়েছে। গত বছরগুলোর তুলনায় এবার বিদেশে আলুর চাহিদা বেড়েছে। আলু রপ্তানিতে কৃষি বিভাগ রপ্তানিকারকদের সাথে কৃষকদের যোগসূত্র স্থাপনে কাজ করছে। এমনকি নানা বিষয়ে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। রপ্তানিযোগ্য আলুর জাতের চাষাবাদ সম্প্রসারণ করা হচ্ছে, যাতে করে কৃষকরা আলু বিদেশে রপ্তানি করে আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নুরুজ্জামান বলেন, আমরা চেষ্টা করি ভালো উৎপাদনের। যেখানে মিটিং, সেমিনার হয় সেখানেই ভালো উৎপাদন করার পরামর্শ দেওয়া হয়। আমরা সব সময় চেষ্টা করি, যেখানে আবাদ বেশি হয় সেখানকার চাহিদা মিটিয়ে বাইরের দেশে রপ্তানির জন্য। এতে করে কৃষকরা ভালো দাম পায়। এবার জেলায় ৪৫ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ইমরান আলী সোহাগ/এবিএস