প্রতিবন্ধী সানজিদার কাছে ঘর হস্তান্তর

মা-বাবাহারা শারীরিক প্রতিবন্ধী সানজিদা। বোনদের কাছ থেকে বড় হয়েছেন। অন্যের বোঝা হয়ে না থেকে শিখেছেন সরকারি বিভিন্ন ট্রেডের কাজ। গত ২৫ জানুয়ারি সমাজসেবা অফিস থেকে তাকে একটি সেলাই মেশিন দেওয়া হয়। সেই অনুষ্ঠানে তিনি জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসানের কাছে থাকার জন্য একটি ঘর চান। তিনিও কথা দেন ঘর দেওয়ার। সেই কথা রাখতে শনিবার (২০ মার্চ) বেলা ১১টায় সিড্যার উত্তর পশ্চিম সিড্যায় সানজিদার কাছে ঘরটি হস্তান্তর করেন জেলা প্রশাসক।

সানজিদা মোবাশ্বেরা ডামুড্যা উপজেলার সিড্যা ইউনিয়নের মৃত আব্দুল আলী শিকদারের ছোট মেয়ে। জন্মগতভাবেই প্রতিবন্ধী তিনি। পড়াশোনা করেছেন এইচএসসি পর্যন্ত।

এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন সানজিদা মোবাশ্বেরা। কান্না থামিয়ে বলেন, জীবনে কখনও কারো ওপর নির্ভর করতে চাইনি। চেয়েছি নিজে পায়ে দাঁড়াতে। স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য সরকারি বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ নিয়েছি। পড়াশোনা করে এগিয়ে যেতে চেয়েছি। থাকার মতো কোনো ছাউনি ছিল না। এখন প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণের জেলা প্রশাসকের সহযোগিতায় একটি ঘর পেয়েছি। এই ঘরে আমি ছোট একটি গার্মেন্টস করতে চাই। এই গার্মেন্টসের লাভের কিছু অংশ আমার মতো প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে কাজে লাগাব।

সানজিদা বলেন, ১০ বছর আগে বাবা-মা মারা যান। সেই থেকে বোনেরা আমার দেখাশোনা করছেন। তারাই আমার পড়ালেখার খরচ দিয়েছে। বাড়ির পাশের একজন আমাকে বিভিন্ন সরকারি ট্রেডে প্রশিক্ষণের কথা বলেন। আমি সেই ট্রেডগুলোতে প্রশিক্ষণ নিই। কয়েকদিন আগে উপজেলা সমাজসেবা অফিসের মাধ্যমে আমাকে হাতেচালিত একটি সেলাই মেশিন দেয়। সেটি নিতে গেলে আমার জীবনের কাহিনী শোনেন জেলা প্রশাসক। আমি সেখানে একটি ঘরের কথা বলি। তখন তারা আমাকে ঘর দেওয়ার কথা বলেন। আজ তা বাস্তব রূপ নিল। আমি প্রধানমন্ত্রী ও তাদের জন্য দোয়া করি।

জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসান বলেন, সানজিদা মোবাশ্বেরা যে অদম্যতা দেখিয়েছে তা অনেকটা বিরল। মুজিববর্ষের এই সময় আমরা সানজিদার পাশে দাঁড়াতে পেরে গর্বিত। আমাদের প্রশাসন ও স্থানীয় প্রশাসনকে জনমুখী হতে হবে। জনগণের উপকারে আসতে হবে, তাদের জন্য কাজ করতে হবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন মাঝি, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মর্তুজা আল মুঈদ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফজলে এলাহী, সিড্যা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলা উদ্দিন আমিন, প্রেসক্লাবের সভাপতি সফিকুল ইসলামসহ বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা, ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও গণ্যমান্য ব্যক্তি।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/এসপি