একমাত্র কন্যা সুমাইয়া খাতুনের (১১) জন্য ঈদের জামাকাপড় কিনে বাড়ি ফেরা হলো না মালয়েশিয়া প্রবাসী মনজুর কাদিরের (৪০)। শুধু কন্যা নয়, স্ত্রীসহ পুরো পরিবারের জন্য ঈদের কেনাকাটা করে বাড়িতে ফেরার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন তিনি। তবে বাড়িতে ফিরেছে মনজুর কাদিরের প্রাণহীন নিথর দেহ।

শুক্রবার (৭ এপ্রিল) সকালে মালয়েশিয়া থেকে মনজুর কাদিরের মরদেহ যশোরের কেশবপুর উপজেলার গোপসানা গ্রামে তার বাড়িতে পৌঁছায়। মানুষের ঢল নামে মনজুরের বাড়িতে। পুরো গ্রামে শোকের ছায়া নেমে আসে। স্বামীর মরদেহ দেখে কিছুক্ষণ পরপর জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন স্ত্রী সোনিয়া খাতুন (৩২)। মনজুর কাদির ওই গ্রামের মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে। পরিবারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে ২০১৪ সালে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান এ রেমিট্যান্স যোদ্ধা।

মনজুর কাদিরের পরিবারের সদস্যরা জানান, গত ৯ বছর ধরে তিনি মালয়েশিয়ায় শ্রমিকের কাজ করতেন। এবার ঈদে তার বাড়ি ফেরার কথা ছিল। সেজন্য শিশু কন্যাসহ পরিবারের সবার জন্য ঈদের কেনাকাটাও করেছিলেন। এরপর হঠাৎ গত ৩১ মার্চ স্ট্রোক করেন তিনি। পরবর্তীতে মালয়েশিয়ার পেনাং শহরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

আহাজারি করতে করতে মনজুর কাদিরের স্ত্রী সোনিয়া খাতুন বলেন, দুই বছরের মেয়েকে রেখে বিদেশ যান। ঈদে বাড়ি এসে আমাদের সঙ্গে নিয়ে সব আত্মীয় বাড়িতে ঘুরতে যাবেন। মেয়ের জন্য নতুন জামাকাপড়ও কিনেছিলেন। দীর্ঘদিন পর তার বাড়ি ফেরার কথা জানতে পেরে আত্মীয়-স্বজনরাও খুশি হয়েছিলেন। তিনি ফিরেছেন, তবে এসেছে তার প্রাণহীন নিথর দেহ।

শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় ঈদগাহ ময়দানে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে মনজুর কাদিরের দাফন সম্পন্ন হয়। এদিকে, প্রবাসী মনজুর কাদিরের অকাল মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে তার পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মুস্তাফিজুল ইসলাম মুক্ত।

এ্যান্টনি দাস অপু/এবিএস