গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সকল রাজনৈতিক দলের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর। 

শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) দুপুর দেড়টার দিকে সাভারের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পিএইসএ মাঠে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসে তিনি এসব কথা বলেন। 

নুরুল হক বলেন, বিভিন্ন মত, দলের কাছে একজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি ছিলেন। তিনি সরকারি কিংবা  বিরোধী দল, সকলের কাছে গ্রহনযোগ্য ব্যক্তি ছিলেন।

তিনি আরও বলেন, আজকে বাংলাদেশে যেভাবে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। আগামী নির্বাচন নিয়ে যে একটা সংকট চলছে তা থেকে উত্তরণে তিনি ভূমিকা রাখতে পারতেন। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও বৈশ্বিক সংকটের কারণে বাংলাদেশ যে অনিশ্চিত সময় পার করছে- এমন সময়ে এ রকম একজন ব্যক্তির দরকার ছিল। যিনি সমস্ত রাজনৈতিক দলের মধ্যে একটা সমঝোতা তৈরি করতে পারতেন, সংকট নিরসনে ভূমিকা নিতে পারতেন।

নুরুল হক বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ১৯৮২ সালে ওষুধ নীতি করার ফলে বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প বিকশিত হয়েছিল। মানুষ স্বল্পমূল্যে ওষুধ সেবা পেয়েছিল। আজকে আর একটা যদি তিনি স্বাস্থ্যনীতি করতে পারতেন চিকিৎসার জন্য, যেটা তার অনেক দিনের ইচ্ছা ছিল। যেটা নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে তিনি পারেননি। আমরা যে দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখি, চিকিৎসা সেবাটা নিশ্চিত করা গেলে এটা অনেকাংশে সম্ভব হতো। আমাদের নিম্ন আয়ের মানুষ চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়েই অনেক খরচ করে ফেলে। 

তিনি বলেন, আমরা ব্যক্তিগতভাবে আসলে একটা বটগাছ হারিয়েছি। যে বটগাছের নিচে আমরা ছায়া পেয়েছিলাম। প্রশস্ত হওয়ার, বিস্তৃত হওয়ার একটা সুযোগ পেয়েছিলাম। বিশেষ করে আমাদের তরুণদেরকে তিনি খুবই ভালোবাসতেন। তরুণরা দেশের রাজনীতিতে এগিয়ে আসুক সেটা তিনি সব সময় চাইতেন। 

নুরুল হক বলেন, এই বৈশ্বিক সংকটে বাংলাদেশের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর মতো আন্তর্জাতিক একজন ব্যক্তিত্ব আছেন, তিনি হলেন ড. ইউনুস। জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ড. ইউনুস ও ফজলে হাসান আবেদ স্যার তারা কিন্তু কাছাকাছি এবং নিকটতম বন্ধু ছিলেন। ড. ইউনুস সাহেব জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে খুব সম্মান করতেন। এই সংকটে তারা চেয়েছিলেন যে একটা উদ্যোগ নিয়ে দেশের জন্য কিছু করার কিন্তু আর হলো না। সেই জায়গা থেকে আমি মনে করি শুধু আমরা না পুরো দেশই একটা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে। এই রকম একজন ব্যক্তি এই সময়ে আগামীতে আমরা পাব কিনা জানি না। সততা, দেশপ্রেম, মানবিকতার ক্ষেত্রে একটা উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ছিলেন। যার গোটা জীবনটাই আসলে বিশ্লেষণ করলে আমরা প্রতিটা কর্মকে আমরা অনুসরণ করতে পারবো ভবিষ্যতের জন্য। তার আদর্শ থেকে কিছুটা আমরা যদি নিজেদের জীবনে বাস্তবায়ন করতে পারি সেটাই হয়তো তার বেঁচে থাকা এবং কর্মের স্বার্থকতা।

মাহিদুল মাহিদ/আরএআর