‘ইফতারের পর মাগরিবের নামাজ শেষ করে মোনাজাতে বসেছি। এমন সময় বিকট এক আওয়াজ শুনি যেন বোমা ফেটেছে। এমন আওয়াজ জন্মের পরে আর শুনিনি। সবাই খুব ভয় পেয়েছিলাম,’ স্থানীয় বাসিন্দা খোকন মিয়া বলেছিলেন মালবাহী ট্রেনে যাত্রীবাহী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস পেছন থেকে ধাক্কা দেওয়ার পরের ঘটনা।

রোববার (১৬ এপ্রিল) রাতে ঘটনাস্থল থেকে ঢাকা পোস্টকে এসব কথা বলেন খোকন মিয়া।

তিনি বলেন, ‘নামাজের মোনাজাত শেষ করে মসজিদের বাইরে এসে দেখি মানুষ শুধু দৌড়াচ্ছে। এগিয়ে দেখি শুধু ধোঁয়া আর ধোঁয়া। পুরো এলাকায় তেলের গন্ধে ম ম। কেউ কেউ বলছেন, পার্সেলের গাড়ি এক্সিডেন্ট করেছে।’

খোকন মিয়া বলেন, ‘তখন দৌড়ে ঘটনাস্থলে আসি। এসে দেখি ট্রেনের বগিগুলো এলোমেলো হয়ে পড়ে আছে। ভেতরের মানুষেরা বের হওয়ার চেষ্টা করছে। তখন স্থানীয় মানুষদের নিয়ে বহু চেষ্টা করে ভেতরের মানুষগুলো বের করি। আহতদের নেওয়া হলো হাসপাতালে। যারা সুস্থদের তাদের কুমিল্লা পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড, লাকসাম ও চৌদ্দগ্রাম চলে যেতে বলি। সেখানে গেলে যাত্রীবাহী বাস পাওয়া যায়। আমার জীবনে এত বড় দুর্ঘটনা দেখিনি। তবে আল্লাহর অশেষ মেহেরবানি কোনো লোক মারা যায়নি।’

প্রসঙ্গত, রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার হাসানপুর রেলওয়ে স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা মালবাহী ট্রেনে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস নামক ট্রেন পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের ৭টি বগি লাইনচ্যুত হয়। আহত হন ২০-৩০ জন যাত্রী। আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন। রাত ১১টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম এবং পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান। এখন পর্যন্ত কারও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। 

আরিফ আজগর/ওএফ