সুনামগঞ্জের হাওরে থাকা পাকা ধান দ্রুত কেটে ফেলতে মাইকিং করা হচ্ছে। জেলার বিশ্বম্ভপুর উপজেলা কৃষি অফিস গতকাল সোমবার (১৭ এপ্রিল) থেকে শনির হাওর, খরচার হাওরসহ বিভিন্ন হাওরে নৌকায় করে মাইকিং করছে। 

আবহাওয়ার খারাপ পূর্বাভাস থাকায় মাইকিংয়ে যে জমির ধান ৮০ শতাংশ পেকে গেছে তাদের ধান কর্তনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হাওরের সব ধান কাটার আগ পর্যন্ত সতর্কতামূলক এই মাইকিং অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নয়ন মিয়া। 

তিনি বলেন, আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী আগামী ২২ এপ্রিলের পর থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এ সময় কালবৈশাখী ঝড়সহ শিলাবৃষ্টিতে পাহাড়ি ঢল নেমে হাওরাঞ্চলে আগাম বন্যার শঙ্কা রয়েছে। এমন অবস্থায় জমির ৮০ শতাংশ ধান পেকে গেলে কেটে ফেলতে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। যেন পানি আসার আগেই কৃষকরা ধান ঘরে তুলতে পারেন। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জের ১২ উপজেলায় এ বছর ২ লাখ ২২ হাজার ৭৯৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষাবাদ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪৯৫ হেক্টর বেশি। সম্ভাব্য ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১৩ লাখ ৫৩ হাজার মেট্রিক টন।

এদিকে বিশ্বম্ভপুরের পাশাপাশি শাল্লা উপজেলায়ও চলছে বিশেষ মাইকিং। এছাড়াও জেলার অন্যান্য উপজেলায় মসজিদের মাইকের মাধ্যমে কৃষকদের কাছে এই সতর্কবার্তা পৌঁছানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম। 

তিনি বলেন, আগামী ২৩ ও ২৪ এপ্রিলের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে ভারী বৃষ্টিপাতের কথা বলা হয়েছে। সেই কথা বিবেচনা করে আমরা দ্রুত ধান কাটার নির্দেশনা দিচ্ছি। কৃষকরা যেন আতঙ্কিত হয়ে না পড়েন সে জন্য মসজিদের মাধ্যমে বার্তা পৌঁছাতে বলা হয়েছে। টানা কয়েক দিনের রোদে কৃষকরা স্বস্তিতে ধান কাটছেন। শ্রমিকদের পাশাপাশি এক হাজার সচল হারভেস্টার মেশিন হাওরে ধান কাটছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত জেলার ৩৫ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়ে গেছে। যেভাবে ধান কাটা হচ্ছে তাতে ২৩ এপ্রিলের আগে জেলার ৭০ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়ে যাবে। শাল্লা, ধর্মপাশা, মধ্যনগর এসব উপজেলার শতভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে।  

সোহানুর রহমান সোহান/আরএআর