দোকানের সামনে ঝুলছে সাইনবোর্ড। তাতে লেখা ‘কেনার সামর্থ্য না থাকলে আমাকে (দোকান মালিক) বলে একটা শার্ট ফ্রিতে নিয়ে যাবেন’। দোকানির মূল লক্ষ্য ওই সব বাবাদের মুখে হাসি ফোটানো, যারা পরিবারের সবার জন্য ঈদ উপহার কিনলেও অর্থের অভাবে নিজের পোশাকটি কিনতে পারেননি।

বুধবার (১৯ এপ্রিল) সকালে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলা বাজারের ব্যাংক মোড় এলাকার ‘ইয়াং ফ্যাশন শপ’ নামে একটি দোকানে এমন মানবিক দৃশ্যের দেখা মেলে। রমজানের প্রথম দিন থেকে এই সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রেখেছেন দোকান মালিক সজীব মোল্লা।

দোকানদার সজীব

ব্যতিক্রমী এই চিন্তার বিষয়ে সজীব মোল্লা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি ওই সব বাবাদের খুঁজছি যারা স্ত্রী, সন্তান, আত্মীয়-স্বজন সবার জন্য ঈদের পোশাক কিনতে পারলেও সামান্য কিছু টাকার জন্য নিজের পোশাকটি কিনতে পারেন না। কিন্তু দুঃখের বিষয় এখন পর্যন্ত এমন একজন বাবাও আমার কাছে আসেননি। এছাড়াও কোনো কোনো পরিবারে ছোট্ট শিশুটির মনও ঈদের দিন খারাপ থাকে একটি নতুন পোশাকের জন্য। ঈদ মানে আনন্দ ভাগাভাগি, আমার সামর্থ্য অনুযায়ী আমি কিছু পোশাক এসব অসহায়দের বিনামূল্যে দিচ্ছি।

সজিব মোল্লা আরও বলেন, এখন পর্যন্ত হতদরিদ্র ১২-১৩ জন পোশাক নিয়েছেন। ঈদের আগ পর্যন্ত আরও ১৫-২০ জনের পোশাক বিনামূল্যে দেব। যখন কোনো ব্যক্তি পোশাক গায়ে মানিয়েছে কিনা দেখেন, তখন তার মুখে যে আনন্দ আমি দেখতে পাই তা কোটি টাকা দিয়েও কেনা সম্ভব না।

জাজিরার বাসিন্দা হিমেল আহমেদ নামে একজন বলেন, সজিব ভাইয়ের উদ্যোগটি প্রশংসার দাবি রাখে। তিনি ছোটবেলা থেকেই একটু অন্যরকম মানুষ। সাধারণ খেটে খাওয়া দরিদ্র মানুষগুলোর জন্য তিনি চিন্তা করেন। গত শীতেও গরিব মানুষকে দোকান থেকে বিনামূল্যে শীতের কাপড় দিয়েছেন। সমাজের সামর্থ্যবান প্রত্যেক ব্যক্তি যদি এভাবে এগিয়ে আসত, তাহলে দেশটা অন্যরকম হতো। 

জাজিরা পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, সজীব বেশ আলাদা। সমাজের অবহেলিত মানুষের জন্য তার যে চিন্তা তা সমাজে প্রতিষ্ঠিত অনেকেরই নেই। সজিবের উদ্যোগে গরিব মানুষ শীতে গরম কাপড় পায়। ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে দরিদ্র মানুষের মুখে হাসি ফোটায় সে। বাবাদের কথা ভাবার জন্য সজীবকে পৌরসভার পক্ষ থেকে আমি শুভেচ্ছা জানাই।

আরকে