প‌রিবা‌রের সবাই যখন ঘু‌মি‌য়ে তখন দানের টাকা আনতে বের হ‌য়ে‌ছি‌লেন মা-মেয়ে ও পাড়ার তিন নারী। ওই পাঁচজন নারী মহাসড়‌কের পা‌শে রেললাইন ধ‌রে হেঁটে যা‌চ্ছি‌লেন। এ সময় পেছন দিক থে‌কে আসা ঢাকাগামী একতা এক্স‌প্রেস ট্রেনের ধাক্কায় মা ও মে‌য়েসহ চারজন ঘটনাস্থ‌লে মারা যান। 

বুধবার (১৯ এ‌প্রিল) ভোর সা‌ড়ে ৫টার দি‌কে ঢাকা উত্তর ও দ‌ক্ষিণাঞ্চল রেললাই‌নের জেলার কা‌লিহাতী উপ‌জেলার মীরহামজা‌নি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ‌দি‌কে একই পাড়ায় চারজ‌নের মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শো‌কের ছায়া নে‌মে আ‌সে। 

তারা হলেন, ভূঞাপুর উপ‌জেলার নিকরাইল দাস পাড়া এলাকার মৃত গোপাল দা‌সের স্ত্রী বাসন্তী (৬০), একই পাড়ার মৃত অনাথ দাসের স্ত্রী ও নিকরাইল রানী দীনম‌নি উচ্চ বিদ্যালয়ের আয়া আরতী রানী দাস (৫০), হরি বন্ধু দা‌সের স্ত্রী শান্তি রানী (৪৮) ও শা‌ন্তির মে‌য়ে শিল্পী রানী (২৮)। এছাড়া আহত হন তা‌দের সঙ্গে থাকা জোছনা রানী দাস না‌মের আ‌রেক নারী।

নিহত শা‌ন্তি রানী দা‌সের ছে‌লে গোরাঙ্গ চন্দ্র দাস ব‌লেন, আমরা সবাই ঘু‌মি‌য়ে ছিলাম। বা‌ড়ির কাউ‌কে না জা‌নি‌য়ে মা, আমার বোন ও পাড়ার আ‌রও তিনজন নারী‌ মিলে অনুদা‌নের জন্য সল্লা এলাকায় যা‌চ্ছিল। রেললাই‌নের উপর দি‌য়ে হেঁটে যাওয়ার সময় তারা ট্রেনের ধাক্কায় মারা যায় ব‌লে খবর পাই। প‌রে ঘটনাস্থ‌লে গি‌য়ে দে‌খি তাদের মরদেহ ছ‌ড়ি‌য়ে ছি‌টি‌য়ে প‌ড়ে আ‌ছে। 

নিকরাইল দাসপাড়া কা‌লিম‌ন্দি‌র ক‌মি‌টির সভাপ‌তি জীবন চন্দ্র দাস ব‌লেন, ঈদ উপল‌ক্ষ্যে সল্লার একজন দানশীল ব্যক্তি গরিবদের দান দেন। এমন খবর পে‌য়ে তারা পাঁচজন মি‌লে বা‌ড়ির কাউ‌কে না জানিয়ে দানের টাকা নি‌তে যা‌চ্ছিল। এখন ফিরল লাশ হ‌য়ে। নিকরাইল মহাশ্মশান ঘা‌টে একসঙ্গে চারজ‌নের মর‌দেহ দাহ করা হ‌বে। 

নিকরাইল রানী দীনম‌নি উচ্চ বিদ্যাল‌য়ের প্রধান শিক্ষক মো. ম‌তিয়ার রহমান ব‌লেন, ওই ৪ নারী একই পাড়ার। এর ম‌ধ্যে আর‌তী রানী আমা‌দের স্কু‌লের খণ্ডকালীন আয়া হি‌সে‌বে কাজ কর‌তেন। 

টাঙ্গাইলের রেলও‌য়ে পু‌লিশের সহকা‌রী উপ প‌রিদর্শক (এএসআই) ফজলুল হক ব‌লেন, মৃতের স্বজনরা ময়নাতদ‌ন্ত না করার আ‌বেদন কর‌লে মর‌দেহ তা‌দের স্বজন‌দের কা‌ছে হস্তান্তর করা হয়। 

অভিজিৎ ঘোষ/আরকে