বরিশালে মহাসড়কে ভিন্ন ঈদযাত্রা উপভোগ করছে ঘরমুখো মানুষ। নৌপথেও এখনো বাড়েনি ভিড়। স্বস্তিতেই বাড়ি ফিরছে মানুষ।  তবে পরিবহনগুলোতে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করছে শনিবার নাকি রোববার ঈদ। তবে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক আজ বুধবার (১৯ এপ্রিল) কর্মদিবস শেষ হয়েছে। ছুটি পেয়েই নাড়ির টানে যার যার গন্তব্যে ছুটছে মানুষ। পদ্মা সেতুর সুফলে স্বল্প সময়ে ঘরে ফিরতে পেরে খুশি দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ।

রূপাতলী বাসস্ট্যান্ডে সপরিবারে অপেক্ষা করছিলেন সুমন। যাবেন ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলায়। তিনি বলেন, ময়মনসিংহ থেকে লাবিব পরিবহনে বরিশালে এসে পৌঁছেছি। অন্য সময়ে ভাড়া ৮ থেকে ৯ শ টাকা রাখলেও এবার ১১ শ টাকা টিকিট মূল্য রেখেছে। খুব বাজে সার্ভিসের মধ্যে এসেছি। এ ছাড়া অবশ্য উপায়ও নেই। বাসে ৪০ জন যাত্রীর ধারণক্ষমতা থাকলে তারা তুলছে কমপক্ষে ৭০ জন।

মইদুল ইসলাম নামে আরেক যাত্রী বলেন, ঢাকা থেকে হানিফ পরিবহনে অন্য সময়ে ৫০০ টাকা টিকিট হলেও এখন ৭ থেকে ৯ শ টাকা নিচ্ছে। আমি ৭ শ টাকা টিকিটে এসেছি। এই যাত্রী বলেন, বাসস্ট্যান্ডেও প্রশাসনের কোন নজরদারি নেই, মহাসড়কেও কোনো চেকপোস্ট নেই। প্রতিটি বাসে নির্ধারিত আসনের চেয়ে বেশি যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে। এগুলো নজরদারি না হলে দুর্ঘটনায় অনেক প্রাণহানি হবে।

সাবরিনা সুমি নামে এক যাত্রী বলেন, আগে ভোগান্তির ভয়ে লঞ্চে আসতে হতো। এখন সর্বোচ্চ ৬ ঘণ্টার পথ। এজন্য কিছুটা দুর্ভোগ হলেও বাসে চলে এসেছি। বাস মনিটরিং না হলে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। প্রতিটি বাস মহাসড়কে পাল্লা দিয়ে চলাচল করছে।

বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের বরিশাল নদী বন্দরের পরিদর্শক কবির হোসেন বলেন, সারা বছরের যাত্রী খরা কিছুটা কমেছে। আগের তুলনায় কিছু সংখ্যক যাত্রী বেড়েছে। তবে এক বছর আগেও যে ভয়ংকর রকমের চাপ ছিল তা নেই। মানুষ স্বস্তির সঙ্গে ফিরতে পারছে। বুধবার ঢাকা থেকে ঢাকা-বরিশাল রুটের ৭টি লঞ্চ, দুটি ভায়া এবং একটি সরকারি স্টিমার যাত্রী নিয়ে এসেছে। বৃহস্পতিবার এর সংখ্যা বাড়বে।

বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার দে বলেন, নথুল্লাবাদে যানজট নিরসনে আমাদের উদ্যোগে এবং প্রশাসনের উদ্যোগে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বাসগুলো এসে যাত্রী নামিয়ে যেন আবার ফিরে যেতে পারে সেই নির্দেশনা দেওয়া আছে। এখনো উল্লেখযোগ্য চাপ বাড়েনি। মূল চাপ শুরু হবে বৃহস্পতিবার থেকে।

রূপাতলী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপন বলেন, কিছু কিছু যাত্রী আগেই চলে আসছেন। তবে মূল চাপ শুরু হবে আগামীকাল। রূপাতলীতে বাস শ্রমিকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যেন যাত্রীরা নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে সেভাবে গাড়ি চালাতে। এছাড়া মালিক সমিতি ও প্রশাসন সমন্বয় করে মনিটরিং করছে। 

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) এসএম তানভীর আরাফাত বলেন, মেট্রোপলিটন এলাকায় ঘরমুখো মানুষ যেন নিরাপদে এবং ভোগান্তি ছাড়া ফিরতে পারে তা নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সড়কে যেন গাড়ি রেখে কেউ ভোগান্তি না তৈরি করে এজন্য সঠিক নির্দেশনা দেওয়া আছে। ভোগান্তিমুক্ত যাত্রার নিশ্চয়তা দিতে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর