বরিশালের আগৈলঝাড়ায় কন্যা সন্তান জন্ম হওয়ায় ওই নবজাতক সন্তানের গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে মায়ের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় নবজাতকের মাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের পূর্বপয়সা গ্রামে বৃহস্পতিবার ভোরে এ ঘটনা ঘটেছে।

আগৈলঝাড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম ছরোয়ার জানান, ওই গ্রামের মিলন বখতিয়ারের সঙ্গে বিয়ে হয় রুমার। বিয়ের পর তাদের দাম্পত্য জীবনে ৫ বছরের মারুফা ও দেড় বছরের সোহানা নামে দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। ভোরে রুমা খানম আরও একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। কন্যা সন্তান জন্মের দুই ঘণ্টা পর ওই নবজাতকের গলায় রশি পেঁচিয়ে হত্যা করে রুমা। এসময় প্রতিবেশী সাদিয়া বেগম রুমার সদ্য ভূমিষ্ট কন্যা সন্তান দেখতে এলে সন্তানকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পেলে মৃত্যুর ঘটনা প্রকাশ পায়।

এক পর্যায় আগৈলঝাড়া থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) মাজহারুল ইসলাম ঘটনাস্থলে পৌঁছে জিজ্ঞাসার একপর্যায়ে মা রুমা খানম নিজেই কন্যা সন্তানকে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করেন।

রুমা খানম জানান, তার দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। সদ্য ভূমিষ্ট হওয়া সন্তান কন্যা হওয়ায় ক্ষোভে-দুঃখে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এসময় পুলিশ রুমা খানমকে গ্রেপ্তার করে ও মৃত কন্যা সন্তানের লাশ থানায় নিয়ে যায়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম আল বেরুনী ও ওসি মো. গোলাম ছরোয়ার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

রুমা খানমের স্বামী মিলন বকতিয়ার জানান, ৭ বছর পূর্বে ভালোবেসে বিয়ে করেন খাজুরিয়া গ্রামের রুমা খানমকে। পরে পরিবার মেনে নিলে তাদের দাম্পত্য জীবনে দুটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। দেড় বছরের কন্যা শিশু থাকতে আবারও রুমা খানম তৃতীয় কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। রুমা হয়তো পরপর তিনটি কন্যা সন্তান জন্ম হওয়াতে সদ্য ভূমিষ্ট সন্তানকে নিজ হাতে হত্যা করেছে।

এ ঘটনায় রুমার স্বামী মিলন বকতিয়ার বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার সকালে স্ত্রী রুমা খানমকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে শিশুর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের মর্গে ও আসামি রুমা খানমকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/এমএএস