গর্ভে যমজ শিশু, হাসপাতাল থেকে দেওয়া হলো একজনকে!
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটার থেকে লিজা নামে এক প্রসূতির নবজাতক গায়েব করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (২১ এপ্রিল) দুপুরে জেলা শহরের মুন্সেফপাড়া খ্রিষ্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। লিজা জেলার নবীনগর উপজেলার আলেয়াবাদ গ্রামের ফরহাদ আহমেদের স্ত্রী।
ফরহাদ আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, আমার স্ত্রী প্রথমবারের মতো গর্ভবতী হলে উপজেলার স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক মেহেরুন্নেছার তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিল। ওই সময় আল্ট্রাসনোগ্রাফিতে আমার স্ত্রীর গর্ভে ২টি সন্তান দেখা যায় বলে জানান চিকিৎসকরা।
বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ ১৮ এপ্রিল করা আল্ট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্টে গর্ভে দুটি সন্তান আসে। শুক্রবার আমার স্ত্রী লিজার প্রসব ব্যথা উঠে। যমজ শিশু গর্ভে থাকায় স্থানীয় চিকিৎসকরা ঝুঁকি না নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে হাসপাতালে এনে সিজারিয়ান করতে পরামর্শ দেন। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে তাকে শহরের খ্রিষ্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তাকে ডা. নওরিন পারভেজ আল্ট্রাসনোগ্রাফি করেন। উনার রিপোর্টেও দুটি সন্তান দেখা যায়। পরে তিনি নিজেই লিজাকে অপারেশন থিয়েটারে সিজারিয়ান করেন। এর কিছুক্ষণ পর হাসপাতালের লোকজন এসে জানান, আমার স্ত্রী একটি কন্যা সন্তান জন্ম দিয়েছে। আর কোনো সন্তানের কথা তারা জানাতে পারেনি।
তারা জানায়, আমার স্ত্রীর গর্ভে নাকি একটি সন্তান ছিল। কিন্তু আমার প্রশ্ন নবীনগরে আল্ট্রাসনোগ্রাফিতে দুটি সন্তানের কথা জানিয়েছে, এখানে তাদের চিকিৎসকও দুটি সন্তানের কথা জানান। তাহলে আমার আরেক সন্তান গেল কোথায়?
বিজ্ঞাপন
এই বিষয়ে খ্রিষ্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালের আল্ট্রাসনোগ্রাফি ও সিজারিয়ান করা চিকিৎসক নওরিন পারভেজ বলেন, আমি দুই জায়গায় হার্টবিট পেয়েছি। অনেক সময় আমাদের দেখা এবং অনুমানে ভুল হতে পারে। সেই অনুযায়ী আমি রিপোর্ট দিয়েছি। তবে সিজারিয়ানে গর্ভে একটি সন্তান পাওয়া গেছে।
খ্রিষ্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মার্শাল চৌধুরী বলেন, আমরা রোগীর অভিভাবকদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি এটা মেডিকেলের বিষয়, কিন্তু তারা চেচামেচি করে গরম করে দিয়েছে। বাধ্য হয়ে প্রশাসনকে ডেকেছি।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ১নং শহর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শেহাবুর রহমান জানান, শিশুর বাবা অভিযোগ করেছেন আল্ট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্টে দুই শিশু ছিল। হাসপাতালের চিকিৎসকও আল্ট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্টে দুই শিশু দেখেছেন। কিন্তু সিজারে এক শিশু পাওয়া গেছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।
বাহাদুর আলম/এমএএস