আইনজীবীদের কল্যাণ তহবিলের স্থায়ী আমানতের (এফডিআর) ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক ও বর্তমান সভাপতির সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে। সোমবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে সমিতির কার্যনিবার্হী কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় বলে ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম।

সদস্যপদ স্থগিত হওয়া দুই আইনজীবী হলেন, সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম ও বর্তমান সভাপতি আবু সাইদ। এর মধ্যে আবু সাইদ গত সেশনেও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।

জানা যায়, ২০১৮ সাল থেকে বারবার সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট আবু সাইদ। এই সুযোগে এফডিআরসহ অন্যান্য ফান্ডের টাকা নির্দিষ্ট হিসেবে জমা না দিয়ে নিজেরাই আত্মসাত করেছেন। তারা দায়িত্বে থাকার সময় ঠিকমত কার্যনির্বাহী কমিটির সভাও করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন একাধিক আইনজীবী। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি সমিতির বার্ষিক নির্বাচনের পরে টাকার হিসেব নিয়ে সাধারণ আইনজীবীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছিল। আইনজীবীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে লেখালেখি করলে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট আবু হানিফ মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের ধারণা ছিল প্রায় ২ কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন জহিরুল ইসলাম ও আবু সাইদ। কিন্তু আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় দেখা গেছে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আমরা যারা সাধারণ আইনজীবী রয়েছি, তাদের ন্যায্য হিসেব বুঝে পাবো বলে আশা করছি।

সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আইনজীবী সমিতির এফডিআরের ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা আত্মসাতের দায়ে সাবেক সভাপতি জহিরুল ইসলাম ও বর্তমান সভাপতি আবু সাঈদের সদস্যপদ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে ঘটনা খতিয়ে দেখতে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সদস্যপদ ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত তারা আইনজীবী হিসেবে কোনো মামলা পরিচালনা করতে পারবেন না।

সদস্যপদ স্থগিতের বিষয়ে অ্যাডভোকেট আবু সাইদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আইনজীবী সমিতির সভাপতি আমি, আমার অনুমতি নিয়ে সাধারণ সম্পাদক সভা আহ্বান করতে পারেন। কিন্তু তিনি আমাকে না জানিয়ে সভা আহ্বান করে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। সমিতির গণতান্ত্রিক সভাপতির নির্বাহী ক্ষমতা বলে পরবর্তীতে আইনজীবী সমিতির সভা ডেকে এই সিদ্ধান্ত আমি স্থগতি করে দেব। এ সময় তিনি টাকা আত্মসাতের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

এবিএস