প্রেমিককে বিয়ের দাবিতে অনশনে বসেছেন টাঙ্গাইল 'ল' কলেজের আইন বিভা‌গের এক ছাত্রী। অভিযুক্ত প্রেমি‌ক সাইফুল ইসলাম বাবুর (২৩) বাড়িতে গতকাল শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) সকাল থেকে অবস্থান নিয়েছেন ওই নারী।

ঘটনা‌টি ঘ‌টে‌ছে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া ইউনিয়নের কলেজপাড়া এলাকায়। সাইফুল ওই এলাকার মনোয়ার হোসেনের ছেলে।

জানা যায়, পড়াশোনার সুবা‌দে সহপা‌ঠী সাইফুল ইসলা‌ম বাবুর সঙ্গে সম্পর্ক গ‌ড়ে ওঠে ওই ছাত্রীর। একপর্যা‌য়ে তাদের মধ্যে শা‌রীরিক সম্প‌র্ক হয়। কিন্তু পরব‌র্তিতে প্রেমিক বি‌য়ে কর‌তে অস্বীকৃ‌তি জানালে ওই নারী বি‌য়ের দাবিতে সাইফুলের বা‌ড়ি‌তে অনশন শুরু ক‌রে। 

শনিবার (২৯ এপ্রিল) করটিয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড সদস্য মো. শাহীন মিয়া জানান, শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে বিয়ের দাবি নি‌য়ে এক শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম বাবুদের বাড়িতে ওঠেন। প‌রে সংবাদ পে‌য়ে বিষয়‌টি মিমাংসা কর‌তে ঘটনাস্থ‌লে যাই। ওই দিন রাত পর্যন্ত বিষয়টি মিমাংসা করতে না পারায় ওই শিক্ষার্থী‌কে আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দি‌য়ে আ‌সি। য‌দিও বা‌ড়ি‌তে তখন প্রেমিক উপ‌স্থিত ছিলেন। 

প্রেমিকা জানান, সাইফুল ইসলাম বাবুর সঙ্গে টাঙ্গাইল 'ল' কলেজে আইন বিভাগে পড়াশোনা করেন। গত ১ বছর ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। একপর্যা‌য়ে বি‌য়ের প্রলোভনে তাদের মধ্যে শা‌রীরিক সম্পর্ক হয়। একবার টাঙ্গাই‌লের এক‌টি পার্কে দুইজন বেড়া‌তে গি‌য়ে পু‌লি‌শের হা‌তে ধরাও প‌ড়ে‌ছিলেন। দুইজ‌নের সম্প‌র্কের কথা প‌রিবারও জান‌তো। বর্তমা‌নে তার প্রেমিক সম্পর্কের কথা অস্বীকার করছেন। 

ওই ছাত্রী বলেন, এখন আমার কি হ‌বে। সর্বস্ব কে‌ড়ে নি‌য়ে এখন সে আমা‌কে বি‌য়ে করবে না ব‌লে জানিয়েছে। তাই বাধ্য হ‌য়ে তার বা‌ড়ি‌তে অবস্থান নিয়েছি। বিয়ে না করলে আত্মহত্যা করা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।

স্থানীয়রা জানান, প্রেমিকার বয়স ৩৫ বছর আর প্রেমিকের বয়স সর্বোচ্চ ২৫ বছর। অসম এ প্রেমের সম্পর্কটি সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। এরপরও তারা এলাকার মান সম্মান রক্ষায় এ ঘটনার সুষ্ঠু সমাধানের দাবি জানান। 

টাঙ্গাইল জজ কোর্টের এপি‌পি ও ক‌রো‌টিয়ার ক‌লেজপাড়ার বা‌সিন্দা অনিতা সরকার বলেন, মেয়েটি বিয়ের দাবিতে প্রতিবেশী সাইফুলের বাড়িতে উঠেছে। শ‌নিবারও সেখানে অবস্থান করছে। কিন্তু ছেলেটা সম্পর্কের কথা অস্বীকার করছে। এদিকে মেয়েটা অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের কথা জানিয়েছে। প্রমাণ না থাকায় এখনও কোনো সমাধান হয়নি।

সাইফুল ইস‌লাম বাবু ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে সম্প‌র্কের কথা অস্বীকার ক‌রে‌ জানান, সে আমার ক‌লে‌জে একই বিভা‌গে পড়াশোনা ক‌রে। সেই সুবা‌দে তার সঙ্গে প‌রিচয়। এছাড়া আমাদের মাঝে কোনো সম্পর্ক নেই। 

টাঙ্গাইল সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস ছালাম মিয়া জানান, ওই নারী এখনো থানায় অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হ‌বে। 

অ‌ভি‌জিৎ ঘোষ/আরকে