স্বামীর নির্যাতনে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর মৃত সন্তান প্রসব!
পটুয়াখালীর বাউফলে স্বামীর নির্যাতনের ফলে সাবিনা বেগম (২২) নামে এক পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারীর মৃত সন্তান প্রসব হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (৫ মে) রাত সোয়া ৮টার দিকে শহরের কবরস্থান সড়কে ওই ঘটনা ঘটেছে। আহত ওই নারীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও আহত সাবিনার স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মো. ছালাম মোল্লার মেয়ে সাবিনার সঙ্গে বিয়ে হয় পাশের বগা ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামের মো. মোজাফ্ফর মোল্লা ছেলে মো. সুজন মোল্লার (২৬)। সুমন ঢাকায় দর্জির কাজ করেন।
বিজ্ঞাপন
সাবিনার মা আকলিমা বেগম বলেন, আমরা গরিব মানুষ। তার স্বামী রাজমিস্ত্রীর কাজ করে। এরপরেও মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে বিয়ের সময় ধারদেনা করে দুই লাখ টাকা যৌতুক দিয়েছি। এখন ফের পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে সুজন। যা কোনোভাবেই দেওয়া সম্ভব ছিল না। এ কারণে সাবিনাকে প্রায়ই মারধর করত। শুক্রবার দুপুরে সাবিনাকে টাকা এনে দিতে বললে সে পারবে না বলে জানায়। তখন ক্ষুব্ধ হয়ে সুজন মারতে গেলে দৌঁড়ে নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করে সাবিনা। পেছন থেকে লাথি মারলে সাবিনা মাটিতে পড়ে যান। অসুস্থ সাবিনাকে তার স্বজনেরা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উদ্দেশে রওনা দেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কাছাকাছি পৌঁছালে রাত ৮টার দিকে সড়কের ওপর অটোরিকশার মধ্যেই পাঁচ মাসের মৃত ছেলেসন্তান প্রসব করেন সাবিনা।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান পাঁচ মাসের মৃত সন্তান প্রসবের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘তাকে (সাবিনা) ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর বাইরে এই মুহুর্তে কিছু বলা যাচ্ছে না।’
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে সুজন মোল্লা অভিযোগ অস্বীকার করে মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি বৃহস্পতিবার ঢাকা এসেছি। শুক্রবার নির্যাতন করব কীভাবে? বাস্তবে অন্য ছেলের সঙ্গে সাবিনার প্রেম আছে, আমার সঙ্গে থাকতে চায় না। এ কারণে আমার সন্তান মেরে ফেলেছে।’
বাউফল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এটিএম আরিচুল হক বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
আরকে