গভীর রাতে মোটরসাইকেলযোগে ঘুরতে বের হয়েছিলেন একই এলাকার তিন বন্ধু। কিন্তু ভাগ্যের কাছে হেরে গিয়ে বাড়ি ফিরতে হলো লাশ হয়ে। একই এলাকার তিনজনের এমন মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকাবাসীর মধ্যে।

নিহতরা হলেন- গোপালগঞ্জের সদর উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের ছোটফা গ্রামের ডাব্লিউ শেখের ছেলে তাজিম শেখ (১৭), শোকর শেখের ছেলে জামির শেখ ও ইছাখালী গ্রামের শুকুর সরদারের ছেলে হাসান সরদার।

নিহতদের মধ্যে তাজিম শেখ ও জামির শেখ ইউনাইটেড একাডেমি খালিয়ার দশম শ্রেণির ছাত্র। আর হাসান সরদার দিনমজুরের কাজ করতেন।

জানা গেছে, রোববার (৭ মে) রাতে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের ছোটফা গ্রাম থেকে মোটরসাইকেলযোগে শহরে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন একই এলাকার তিন বন্ধু। রাতে জেলা শহরের একটি রেস্টুরেন্টে খাওয়াদাওয়া শেষে নিজ এলাকায় ফিরছিলেন। পথিমধ্যে সদর উপজেলার বিজয়পাশা এলাকায় পৌঁছালে তাদের মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে এবং তিনজন ছিটকে পড়ে। এ সময় মোটরসাইকেলটিতে আগুন ধরে যায় ও ঘটনাস্থলেই একজনের মৃত্যু হয়। পুলিশ ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় অপর দুইজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সকালে ঢাকায় তাদের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

নিহত তাজিম শেখের বাবা শোকর শেখ বলেন, আমার ছেলে ইউনাইটেড একাডেমি খালিয়ার দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল। গত রাতে একই এলাকার হাসান ও তাজিমের সঙ্গে মোটরসাইকেলযোগে ঘুরতে বের হয়েছিলেন। গভীর রাতে কল আসে আমার ছেলে এক্সিডেন্ট করেছে। পরে আমরা গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নিতে বলেন। পরে আমরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে আমার ছেলের মৃত্যু হয়। আমার একটা মাত্র ছেলে। আমার আর কিছু রইলো না।

নিহত জামির শেখের ভাই কাবির শেখ বলেন, আমার ভাইকে যেতে নিষেধ করেছিলাম। গভীর রাতে কল আসে আমার ভাই এক্সিডেন্ট করে হাসপাতালে ভর্তি আছে। পরে আমরা গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে গিয়ে আমার ভাইকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। আজ দুপুরে আমার ভাইয়ের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

জালালাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এফ এম মারুফ রেজা বলেন, নিহত তিনজনের বাড়ি আমার ইউনিয়নে। এদের মধ্যে দুইজন দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। আর একজন দিনমজুরের কাজ করেন। আজ দুপুরে তাদের তিনজনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

ভাটিয়াপাড়া হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ খান শরিফুল ইসলাম বলেন, নিহতদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। বেপরোয়া গতিই দুর্ঘটনার মূল কারণ বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আশিক জামান/এমজেইউ