যুবলীগ নেতাকে থানায় নির্যাতন, ওসিসহ ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা
ঠাকুরগাঁও সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন। ছবি- সংগৃহীত
ঠাকুরগাঁও সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেনসহ পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ এনে মামলার আবেদন করেছেন যুবলীগ নেতা আসাদুজ্জামান পুলক। অভিযোগটি আমলে নিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামলা নিতে পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (১০ মে) ঠাকুরগাঁও জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. মামুনুর রশিদ এ আদেশ দেন। এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলাউদ্দীনকে দায়িত্ব দিয়েছেন আদালত।
বিজ্ঞাপন
মামলার আসামিরা হলেন- ঠাকুরগাঁও সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন, ওসি (অপারেশন) মো. লতিফ, এসআই খোকা চন্দ্র রায় ও মোহাম্মদ হাফিজ এবং এএসআই মো. মোতালেব।
দায়রা ও জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ঠাকুরগাঁও সদর থানা পুলিশের পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়রা ও জজ আদালতে আসাদুজ্জামান পুলক নামের এক ব্যক্তি মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে মামলাটিকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মামলার বাদীকে চিকিৎসার জন্য সিভিল সার্জনকে আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আদালতে দেওয়া অভিযোগে বলা হয়, গত ২৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় ঠাকুরগাঁও সাধারণ পাঠাগার চত্বরে অনুষ্ঠিত বৈশাখী মেলায় দর্শনার্থী হিসেবে যান জেলা যুবলীগের ক্রীড়া সম্পাদক খালিদ সিরাজ রকি। এ সময় ওসি মো. কামাল হোসেন, এএসআই খোকা চন্দ্র রায়, মো. মোতালেব, মো. হাফিজ ও অপারেশন ইনচার্জ মো. লতিফ অন্যায়ভাবে তাকে আটক করে মারধর করতে থাকে। পরে আসাদুজ্জামান পুলক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জানতে চাইলে ওসি মো. কামাল হোসেনসহ অন্য আসামিরা তাকে মারধর করে পুলিশের পিকআপে তুলে থানায় নিয়ে যায়। এ সময় ওসি আসাদুজ্জামান পুলকের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন, অন্যথায় তাকে ক্রসফায়ারে দেবে বলে হুমকি দেন। তাদের দাবিকৃত টাকা না দিতে পারায় আসাদুজ্জামান পুলককে থানা হেফাজতে রেখে ওসিসহ অন্য আসামিরা নির্মমভাবে মারধর করতে থাকে। নির্যাতনের একপর্যায়ে ওসির লাঠির আঘাতে আসাদুজ্জামান পুলকের বাম হাতের হাড় ভেঙে যায়।
পরে গত ৩০ এপ্রিল আসাদুজ্জামান পুলককে ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর গত ২ মে আদালতের মাধ্যমে জামিনে বের হয়ে আসাদুজ্জামান পুলক হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। আট দিন ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ আদালতে মামলাটির আবেদন করেন যুবলীগের এ নেতা।
যুবলীগ নেতা আসাদুজ্জামান পুলককে ওসি মো. কামাল হোসেনসহ পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তার নির্যাতন
এ বিষয়ে জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মামলার বাদী আসাদুজ্জামান পুলক বলেন, ওসিসহ বাকি পুলিশ কর্মকর্তারা আমার সঙ্গে যে অন্যায় করেছে আর কেউ যেন এরকম অন্যায়ের শিকার না হন। আদালতের আদেশে আমি সন্তুষ্ট।
এমজেইউ