ইনসেটে নিহত শফিকুল ইসলাম

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলায় ঘরের বাইর থেকে তালা লাগিয়ে আগুন দিয়ে শফিকুল ইসলাম (৩০) নামে এক কাপড় ব্যবসায়ীকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (১০ মে) ভোররাতে উপজেলার ঘোগা ইউনিয়নের কালীবাড়ী-বড়ামা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের বড় ভাই হাফিজুল ইসলামকে আটক করেছে পুলিশ। নিহত শফিকুল ইসলাম ওই এলাকার হাছান আলীর ছেলে। তিনি উপজেলার কালীবাড়ী বাজারে কাপড়ের ব্যবসা করতেন।

নিহত শফিকুলের বাবা হাছেন আলী জানান, মঙ্গলবার রাত সোয়া ৩টার দিকে হঠাৎ হাফ বিল্ডিং বাড়ির মাঝখানের কক্ষে বিকট শব্দ শুনতে পান তিনি। আওয়াজ শুনে হাছেন আলী অন্য কক্ষ থেকে বের হতে চেষ্টা করেন। কিন্তু দরজার বাইরে রশি দিয়ে বাঁধা থাকায় তিনি ঘর থেকে বের হতে পারছিলেন না। পরে কাঁচি দিয়ে রশি কেটে ঘর থেকে বের হন। পরে তিনি দেখেন মাঝখানের কক্ষে দাউদাউ করে আগুন জলছে। এর পাশের কক্ষে ছিল তার ছোট ছেলে এনামুল হক। তাকেও রশি কেটে ঘর থেকে বের করা হয়। কিন্তু মাঝখানের কক্ষ থেকে শফিকুলকে বের করা সম্ভব হয়নি। তার কক্ষে বাহির থেকে তালা দেওয়া ছিল। সেখানেই তিনি পুড়ে মারা যান। এ সময় কক্ষে আর কেউ ছিল না। ৪০ দিন আগে শফিকুলের একটি মেয়ে সন্তান হয়। সেজন্য তার স্ত্রী শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান করায় বেঁচে গেছেন। 

শফিকুলের স্ত্রী সাথী বেগমের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে বড় ভাই হাফিজুল ইসলামের সঙ্গে শফিকুলের জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এ বিষয়ে আদালতে মামলাও চলমান। হাফিজুল এর আগে শফিকুলের পুকুরে বিষ দিয়ে কয়েক লাখ টাকার মাছ মেরে ফেলেছিলেন। একাধিকবার তাকে হত্যাচেষ্টাও করা হয়েছে। সব আলামত নষ্ট করতে হাফিজুলের নেতৃত্বেই আগুন দিয়ে শফিকুলকে হত্যা করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে মুক্তাগাছা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মজিদ বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের বড় ভাই হাফিজুল ইসলামকে আটক করা হয়েছে। তবে এটি পরিকল্পিত ঘটনা নাকি দুর্ঘটনা সেটা জানতে তদন্ত চলছে। রহস্য উদঘাটনে পুলিশের পাশাপাশি সিআইডি, পিবিআই, ডিবি ও র‌্যাবের পৃথক টিম কাজ করছে।

উবায়দুল হক/আরএআর