থানচি উপজেলা যুব উন্নয়ন কার্যালয়

যুবকদের ঋণ বিতরণ, আদায়, প্রশিক্ষণ, ক্লাব গঠন, উদ্বুদ্ধকরণ, সচেতনতা, প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় এবং অফিসের কাজ সবকিছু চলছে মাত্র একজন কর্মচারী দিয়ে। এ চিত্রটি বান্দরবানের থানচি উপজেলা যুব উন্নয়ন কার্যালয়ের। এভাবেই দীর্ঘদিন ধরে কার্যালয়টি চলছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারি প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মকর্তাসহ মোট তিনজন কর্মচারী থাকার কথা থাকলেও তা শুধু কাগজ-কলমে লিপিবদ্ধ। কার্যালয়ের কর্মকর্তা নুপ্রুচিং মারমা, অফিস সহকারী গোলাম রহমান জেলা শহরে অবস্থান করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

দেশের অন্যান্য উপজেলায় ৭ থেকে ৮ জন কর্মচারী থাকলেও প্রতিষ্ঠানটিতে একজনকেই অফিসের কর্মকাণ্ড চালিয়ে নিতে হচ্ছে প্রতিনিয়িত। ফলে থানচি উপজেলা যুব উন্নয়ন কার্যালয়ের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়ছে। যুব সমাজের সাংস্কৃতিক, সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে।

সরেজমিনে উপজেলা যুব উন্নয়ন কার্যালয়ে দেখা গেছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি পড়ে রয়েছে অযত্ন-অবহেলায়। সরকারি নতুন নির্দেশনা অনুসারে সেখানে টাঙানো হয়নি সরকার নির্ধারিত ছবি। কার্যালয়ের ভেতরে ময়লা-অবর্জনা দেখলে মনে হয় না এটি একটি সরকারি অফিস।

এ প্রসঙ্গে থানচির সহকারী উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. গোলাম ফারুক জানান, আমি ২০২০ সালের জুন মাসে যোগদান করেছি। তখন থেকে একা অফিস চালাচ্ছি। 

তিনি আরও বলেন, আমাদের কর্মকর্তা নুপ্রুচিং মারমা বান্দরবান সদর উপজেলা কার্যালয়ের অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছেন। আর অফিস সহকারী গোলাম রহমান দীর্ঘদিন ধরে বাড়িতে অবস্থান করছেন। 

তিনি বলেন, চলতি বছর ঋণ বিতরণ করা হয়েছে প্রায় ২৩ লাখ টাকা। আর আদায় হয়েছে ৮৮ শতাংশ। গত ৫-৬ বছর আগে সহকারী উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা সেলিম রেজার সময়ে ঋণ দেওয়া প্রায় ৪ লক্ষ টাকা ঋণ খেলাপির মধ্যে রয়েছে। আমার একার পক্ষে সব কিছু করা সম্ভব হচ্ছে না।

এই ব্যাপারে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা (চ.দ.) নুপ্রুচিং মারমা বলেন, আপনারা সাংবাদিক, বান্দরবান জেলা কর্মকর্তাকে ফোন করে জানান। আমরা কী শান্তিতে থাকব না। 

তিনি আরও বলেন, আমি বর্তমান দায়িত্ব পালন করব, নাকি অতিরিক্ত দায়িত্ব করব সেটি ঠিক করবেন আমাদের কর্তৃপক্ষ। আমাকে সদর উপজেলা অতিরিক্ত দায়িত্ব এবং কাজ দিয়েছে, তাই থানচিতে অবস্থান করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।

উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা নুপ্রুচিং মারমা থানচিতে ৫ নভেম্বর ২০০০ সাল থেকে ৪ জুলাই ২০০৬ এবং ৩ নভেম্বর ২০০৯ থেকে ২১ মে ২০১০ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছিলেন। পরে আবার ২২ সেপ্টেম্বর ২০১০ সালে থানচি উপজেলা যোগদান করেন। অভিযোগ উঠেছে, বান্দরবান জেলা ডিডি জেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে তিনি এ কাজ করছেন।

এ বিষয়ে বান্দরবান জেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ হাসান আলী বলেন, বান্দরবান জেলার সাতটি উপজেলাতে পর্যাপ্ত অফিসার ও স্টাফের পদ শূন্য রয়েছে। আমি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মহোদয়কে বিষয়টি জানিয়েছি।

রিজভী রাহাত/এসপি