অভিযুক্ত শিক্ষক চিন্ময় বসু

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ছাত্রীকে যৌন হয়রানির দায়ে চিন্ময় বসু নামে এক শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। গতকাল মঙ্গলবার (১৬ মে) জেলা শিক্ষা প্রাথমিক কর্মকর্তা মো. আব্দুল হামিদ স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।

বরখাস্তকৃত চিন্ময় বসু উপজেলার ৯৭নং কান্দি বানিয়ারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তিনি কলাবাড়ী ইউনিয়নের কুমুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা।

অফিস আদেশে বলা হয়, গোপালগঞ্জ জেলাধীন কোটালীপাড়া উপজেলার ৯৭নং কান্দি বানিয়ারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক চিন্ময় বসুর বিরুদ্ধে গত ৯ মে শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ উত্থাপিত হয়। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার দাখিলকৃত প্রতিবেদনে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশ রক্ষার্থে ওই শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো। সাময়িক বরখাস্তকালে তিনি সরকারি বিধি মোতাবেক খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন।

জানা গেছে, গত ৯ মে ক্লাস চলাকালে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ডেকে নিয়ে স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন চিন্ময় বসু। পরে ওই শিক্ষার্থী লজ্জায় বেশ কয়দিন ধরে স্কুলে না গেলে অভিভাবকদের সন্দেহ হয়। পরে ওই শিক্ষার্থীর কাছে তার অভিভাবকরা জানতে চাইলে সে বিষয়টি খুলে বলে। অভিভাবকরা  প্রথমে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। পরে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরে বিষয়টি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নজরে এলে তিনি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটির দেওয়া রিপোর্টে অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির সত্যতা পাওয়ায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

কোটালীপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন বলেন, তদন্তভার পাওয়ার পর আমি সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করেছি। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তদন্ত শেষে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর একটি প্রতিবেদন প্রেরণ করি। পরে প্রতিবেদনে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ও স্বাভাবিক পরিবেশ রক্ষার্থে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস কর্তৃক তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক চিন্ময় বসুর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল হামিদ বলেন, বিষয়টি আমার নজরে আসার পর আমি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্ত করে একটি রিপোর্ট দিতে বলি। পরে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার দেওয়া রিপোর্ট অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় একটি মামলা রুজু হবে। ওই মামলার তদন্ত শেষে তার বিরুদ্ধে আমরা স্থায়ী ব্যবস্থা নেব।

আশিক জামান/আরএআর