বঙ্গবন্ধুকে কাছ থেকে দেখেছেন বলে তাদের বাড়িতে ফুল নিয়ে গেল পুলিশ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তাকে স্বচোখে দেখা শতবর্ষীদের বাড়িতে ফল, ফুল ও মুজিব বর্ষের ক্রেস্ট নিয়ে হাজির হয়েছেন রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিকুজ্জামান।

বুধবার (২৪ মার্চ) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের নারুয়া গ্রামের বৃদ্ধদের বাড়িতে যান ওসি। এসব বৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুকে কাছ থেকে দেখেছেন। ওই গ্রামের ১১৩ বছরের আফসার বিশ্বাস, মধুপুর গ্রামের ১২০ বছরের জন জোয়াদ্দার, নবাবপুর ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের ১০২ বছরের অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল হক, বহরপুর ইউনিয়নের ইলিশকোল গ্রামের ১০২ বছরের কালিপদ সোম, কুবদী গ্রামের ১০৮ বছরের ছকিনা বেগমের হাতে ফুল, ফল ও ক্রেস্ট তুলে দেন ওসি তারিকুজ্জামান। আবেগাপ্লুত হয়ে শতবর্ষীরা ওসি তারিকুজ্জামানকে জড়িয়ে ধরেন। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন কুমার আদিত্য, নবাবপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাসান আলী, নারুয়া বাজার বণিক সমিতির সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গণি শেখ, সোনাপুর বাজার বণিক সমিতির সভাপতি আজিজ ইকবাল, থানা পুলিশের সদস্য ও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।  

নারুয়া ইউনিয়নের নারুয়া গ্রামের আফসার বিশ্বাস বলেন, বঙ্গবন্ধুকে আমি কাছ থেকে দেখেছি। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে একজন ওসি আমাকে দেখতে এসেছেন ফল, ফুল ও ক্রেস্ট নিয়ে। আমি চির কৃতজ্ঞ। এটি আমার জীবনের শেষ সময়ে অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।

উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের নারুয়া গ্রামের বৃদ্ধদের বাড়িতে গিয়ে হাতে ফুল তুলে দেন ওসি

 

মধুপুর গ্রামের জন জোয়াদ্দার বলেন, আমি ওসিকে দোয়া করি, যেন তিনি ভালো কাজ করে যেতে পারেন। অনুপ্রেরণা দিয়ে শেষ বয়সে আমাকে উজ্জীবিত করেছেন ওসি। 

নবাবপুর ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল হক বলেন, একজন পুলিশ সদস্য হিসেবে আজ নিজেকে গর্বিত মনে করছি। জীবনের শেষ সময়ে ওসি আজ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে আমাকে সম্মানিত করলেন; এটি আমার কাছে অনেক পাওয়ার।

বহরপুর ইউনিয়নের ইলিশকোল গ্রামের কালিপদ সোম, কুবদী গ্রামের ছকিনা বেগম ফল, ফুল ও মুজিব শতবর্ষের ক্রেস্ট পেয়ে আবেগে বঙ্গবন্ধুর নানা স্মৃতি তুলে ধরেন।

তরুণ সমাজকর্মী শেখ মহিদুল ইসলাম বলেন, ওসি যে উদ্যোগ নিয়েছেন, এটি তরুণ সমাজের জন্য অনুপ্রেরণার। যে যেখানে থাকি, নিজ অবস্থান থেকে ভালো কাজ করা সম্ভব; এটি তার দৃষ্টান্ত।

নবাবপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবুল হাসান আলী বলেন, বালিয়াকান্দি থানার ওসি যোগদানের পর থেকে মামলা করতে কোনো টাকা লাগে না। দালাল ছাড়া থানায় যেতে হয়। নিজের কথা নিজেকে বলতে হয়। এসব মানবিক কাজে প্রশংসা অর্জন করেছেন ওসি। আজ উপজেলার মানুষ শান্তিতে রয়েছেন। শতবর্ষীদের বাড়িতে ফুল, ফল ও ক্রেস্ট নিয়ে আরেকটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।  

বালিয়াকান্দি থানার ওসি তারিকুজ্জামান বলেন, যারা বঙ্গবন্ধুকে নিজ চোখে দেখেছেন; বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে তাদের সম্মাননা দিয়েছি আমরা। আমি যতদিন থাকব ততদিন এসব শতবর্ষী মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজখবর নেব। 

বালিয়াকান্দি উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, থানার ওসি মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে যে উদ্যোগ নিয়েছেন; তা প্রশংসার দাবিদার। সমাজে ভালো কিছু করার যে অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করেছে; তা বিরল দৃষ্টান্ত। তার এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।  

বি কে সিকদার সজল/এএম