অনিয়মের প্রতিবাদে সাবরেজিস্ট্রি অফিসের সামনে অবস্থান নেন ভুক্তভোগীরা

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সাবরেজিস্ট্রি অফিস নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। ঘুষ, অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে সরকারি এই কার্যালয়টি। উপজেলার সবখানে ঘুষ-দুর্নীতির আখড়াখানা নামে পরিচিতি ছড়িয়েছে। সোমবার (২২ মার্চ) অনিয়মের প্রতিবাদে সাবরেজিস্ট্রি অফিসে অবস্থান নেন ভুক্তভোগীরা।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, দেশের প্রতিটি সাবরেজিস্ট্রি অফিসকে দুর্নীতিমুক্ত রাখার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। কিন্তু দৌলতপুর সাবরেজিস্ট্রি অফিস এর বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে। ফলে প্রকাশ্যে চলছে লাখ লাখ টাকার ঘুষ লেনদেন। অসাধু কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে প্রতিদিনই সাবরেজিস্ট্রি অফিসে সেবা নিতে আসা মানুষদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। 

এদিকে, সাবরেজিস্ট্রি অফিসের কর্মকর্তা ছাড়াও অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে রয়েছে বিভিন্ন চক্র। প্রান্তিক পর্যায়ের ব্যক্তিরা জমিজমা সংক্রান্ত কোনো সমস্যা নিয়ে এলেই সক্রিয় হয়ে ওঠেন তারা।

স্থানীয়রা বলেন, এই উপজেলার সাবরেজিস্ট্রি অফিসের দুর্নীতি নতুন কিছু নয়। বর্তমান সংসদ সদস্য সরওয়ার জাহান বাদশা নির্বাচিত হওয়ার পরে কঠোর নির্দেশনা আসে দৌলতপুর সাবরেজিস্ট্রি অফিসের দুর্নীতির বিষয়ে। তার প্রচেষ্টায় দুর্নীতিমুক্ত হয় দৌলতপুর সাব রেজিস্ট্রি অফিস।

তারা আরও বলেন, কিন্তু বর্তমানে তার চিত্র উল্টো, স্থায়ী কোনো সাবরেজিস্ট্রার না থাকায় অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন খোকসা উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার মকশু মিয়া।

ভুক্তভোগীরা জানান, সাবরেজিস্ট্রি অফিসের বর্তমান দলিল লেখক সমিতির নতুন কমিটি গঠনের পর থেকেই বেড়ে গেছে এই প্রতিষ্ঠানটির দুর্নীতি। দলিল প্রতি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছেন এই দলিল লেখকরা।

সোমবার (২২ মার্চ) সকালে স্থানীয় জনগণ সাবরেজিস্ট্রি অফিসের দুর্নীতির প্রতিবাদে কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। এতে করে সাময়িক বন্ধ হয়ে থাকে রেজিস্ট্রির কার্যক্রম। পরবর্তীতে দেড় ঘণ্টা পরে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পূর্বের মতোই নিয়ম অনুসারে চালু হয় কার্যক্রম। 

দুর্নীতির কথা অস্বীকার করে দলিল লেখক সমিতির সভাপতি বেল্লাল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, দৌলতপুর সাবরেজিস্ট্রি অফিসে কোনো দুর্নীতি হয় না। সকালে স্থানীয় জনগণের অফিস ঘেরাও প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্থানীয় দুর্বৃত্তরা অফিসের সামনে এসে হট্টগোল করেছেন। পরবর্তীতে থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

দলিল লেখক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরজ আলী অভিযোগ করেন, বর্তমান সংসদ সদস্যের নির্দেশ মোতাবেক আমাদের কমিটি দায়িত্বে থাকা অবস্থায় এই অফিস দুর্নীতিমুক্ত ছিল। বর্তমানে কমিটি হওয়ার পর আবারও দুর্নীতি শুরু হয়েছে।

দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শারমিন আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘যারা দুর্নীতি করছেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

রাজু আহমেদ/এমএসআর