জাতীয় গণহত্যা দিবসে বরিশালে ছাত্রসমাবেশ ও আনন্দ মিছিল করেছে ছাত্রলীগ

জাতীয় গণহত্যা দিবসে বরিশালে ছাত্রসমাবেশ ও আনন্দ মিছিল করেছে ছাত্রলীগ। বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) দুপুরে বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার পাতারহাট বন্দরে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ভাইস চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম ভুলুসহ উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এ নিয়ে উপজেলায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। গণহত্যা দিবসে আনন্দ মিছিল করা উচিত হয়নি বলে জানিয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক। 

এদিকে আনন্দ মিছিলে অংশ নেওয়ার বিষয়টি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ করেছেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও সহসভাপতি খোরশেদ আলম ভুলু।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের বিভক্ত দুটি পক্ষ পৃথকভাবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এর মধ্যে সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান শাকিল ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে ছাত্রসমাবেশ ও আনন্দ মিছিলের আয়োজন করেন। 

নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী পুরো উপজেলা থেকে কয়েক হাজার ছাত্রলীগ নেতাকর্মী মিছিল সহকারে বেলা ১১টার দিকে পাতারহাট বন্দরে জড়ো হন। সেখানে অতিথিরা সমাবেশে বক্তব্য দিয়ে ঢাক-ঢোল বাজিয়ে আনন্দ মিছিল নিয়ে পাতারহাট বন্দরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মুক্তিযোদ্ধা মাঠে গিয়ে শেষ হয়।

সমাবেশ ও আনন্দ মিছিলে আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সুভাষ চন্দ্র সরকার, শহীদ শাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান রিপন, দফতর সম্পাদক রাকিব মাহামুদ তালুকদার, সহ-দফতর সম্পাদক অজয় গুহ, শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক মুশফিকুর রহমান নিউটন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শাহে আলম বয়াতি, পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির কাজী, উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি ওহাব আলী, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মশিউর রহমান নাদিম, সাধারণ সম্পাদক উজ্জল দেওয়ান, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক সোহেল মোল্লা, যুগ্ম-আহ্বায়ক সুমন ফরাজী, যুগ্ম-আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান খোকন, উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি মনির জমদ্দার, সাধারণ সম্পাদক বাবুল হাওলাদার, পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আলী আব্দুল্লাহ দোলন, সাধারণ সম্পাদক রুবেল খন্দকার, উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা নবীন, রায়হান মাহমুদ, সোয়াইব আহম্মেদ, এবিএম নয়ন, রবিউল ও পাভেল প্রমুখ।

এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ভাইস চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম ভুলু বলেন, বিষয়টি অন্যভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। আমরা গণহত্যার প্রতিবাদে মিছিল করেছি। 

গণহত্যার প্রতিবাদে কেউ আনন্দ মিছিল করে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনারা (সাংবাদিক) জাতির বিবেক। আমি সচেতনভাবে অনুষ্ঠানে যোগ দিইনি। ভুল হয়ে থাকলে ক্ষমার চোখে দেখবেন। তবে গণহত্যা দিবসে আনন্দ মিছিল করা উচিত হয়নি।

উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান শাকিলের সভায় সাড়ে তিন হাজারের অধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

মোস্তাফিজুর রহমান শাকিল বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর ১০ দিনের কর্মসূচিতে আজকের অনুষ্ঠানটি পড়ে গেছে। আমরা গণহত্যা দিবসটিও মাথায় রেখেছি, সেই সঙ্গে সুবর্ণজয়ন্তীর কর্মসূচিও পালন করেছি। 

কিন্তু গণহত্যা দিবসে আনন্দ মিছিল করা উচিত হয়েছে কিনা প্রশ্ন করা হলে কোনো উত্তর দেননি তিনি। 

জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাকের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, রাষ্ট্রীয় নির্দেশনা মেনে কর্মসূচি গ্রহণ করা উচিত। আমি খোঁজ নিয়ে দেখব বিষয়টি। রাষ্ট্রীয় নির্দেশনা অমান্য কিংবা গণহত্যা দিবসকে অবজ্ঞা করা হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/এএম