ব্যাংক ও এনজিও থেকে লোন পাইয়ে দিতে জমির দলিল ব্যাংক চেক ও নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প নিয়ে সাতটি পরিবারকে মামলা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু পেশাজীবী লীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। 
 
জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার তারাশী গ্রামের মোহাম্মাদ আলি তালুকদারের ছেলে ও বঙ্গবন্ধু পেশাজীবী লীগ কোটালীপাড়া উপজলা শাখার সমাজ সমাজ কল্যাণ সম্পাদক আমিনুল তালুকদারের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টায় কোটালীপাড়া উপজেলার তারাশী গ্রামের হামিদা বেগম নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, চার বছর আগে আমিনুল তালুকদার ব্যাংক লোন পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে চারটি চেকের পাতা ও ৩০০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর ও নগদ ৫০ হাজার টাকা নেয়। ছয় মাস পর আমরা লোন দেওয়ার কথা বললে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন তিনি। এরপর আমরা আমাদের টাকা চাইলে আমাদের হুমকি দেয় উল্টো আমাদের কাছে আরও টাকা পাবে বলে জানায়। 

এর কিছুদিন পর জানতে পারলাম ওই নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প দিয়ে আমিনুল তালুকদার তার স্ত্রী নুপুর তালুকদারকে দিয়ে স্ট্যাম্পের মামলা দিয়েছে। ওই মামলায় আমি ২৮ দিন হাজত খেটেছি। তার কিছুদিন পর গাজীপুর ও গোপালগঞ্জে আমার বিরুদ্ধে একের পর এক চারটি চেকের মামলা দিয়ে আমার পরিবারকে সর্বশান্ত করে দিয়েছে। এলাকার গণ্যমান্য লোক নিয়ে বসলে আমিনুল তালুকদার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গিকারনামা দেয় সে আমাদের বিরুদ্ধে যে প্রতারণা করছে সেটা মামলা প্রত্যাহার করবে। কিন্তু সে ওই মামলা প্রত্যাহার না করে আমাদের কাছে আরও টাকা দাবি করছে। টাকা না দিলে মামলা তুলবে না বলে জানায়। আমরা এই প্রতারণার মামলা থেকে রেহাই পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আমিনুল তালুকদার গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের ইছাখালি গ্রামের হাচিবুর শেখ, মামুন শেখ, রবিউর ফকির, মিরাজ ফকির, পান্নু সরদারসহ ১০-১২ জনের কাছ থেকে লোন দেওয়ার কথা বলে নগদ টাকা, জমির দলিল, ব্যাংক চেক, নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে গোপালগঞ্জ আদালতে চেকের মামলা দিয়েছেন। 
 
জালালাবাদ ইউনিয়নের ইছাখালি গ্রামের মিরাজ ফকির বলেন, আমাকে পাঁচ লাখ টাকা লোন করিয়ে দেবে বলে নগদ ২৫ হাজার টাকা ও ব্যাংক চেক নিয়ে আমার বিরুদ্ধে দশ লাখ টাকার মামলা দিয়েছে। মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই ও প্রতারক থেকে বাঁচতে চাই। 

এ বিষয়ে আমিনুল তালুকদার বলেন, হামিদা বেগম আমার থেকে টাকা নিয়েছে জমি দেওয়ার কথা বলে। সেই টাকার জন্য আমি চেক ও স্ট্যাম্প নিয়েছিলাম। টাকা ফেরত না দেওয়ায় আদালতে মামলা দিয়েছি। এছাড়াও সদর উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের ইছাখালি গ্রামের হাচিবুর শেখ, মামুন শেখসহ তিন-চার জন বালু কেটে দেওয়ার কথা বলে দশ লাখ টাকা নিয়েছে। বিনিময়ে আমাকে চেক দিয়েছিল তাদের বিরুদ্ধেও মামলা দিয়েছি। অঙ্গিকার নামার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন এ বিষয়ে আমি কথা বলতে চাই না।

আশিক জামান/এমএএস