জাতীয় স্মৃতিসৌধ

প্রতিবছর মহান স্বাধীনতা দিবসে বীর শহীদদের প্রতি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে জনতার ঢল নামে। দলে দলে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা জানাতে আসে সাধারণ মানুষ। ফুলে ফুলে ভরে যায় বেদী। তবে এবার এমন চিত্র দেখা যায়নি। 

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে আসায় কিছু সময় জনসাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। পরে জনসাধারণের প্রবেশের জন্য স্মৃতিসৌধ উম্মুক্ত করা করে দেওয়া হলেও তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। 

শুক্রবার (২৬ মার্চ) দুপুর ২টার দিকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে দেখা যায়, দ্বিতীয় দফায় জনসাধারণের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধের ফটক উম্মুক্ত করা হলে কিছু সংখ্যক মানুষ ভেতরে প্রবেশ করে। তবে প্রতিবারের মতো এবার তেমন জনসমাগম নেই। প্রতিবছর এই সময় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে জনতার ঢল নামে। সে তুলনায় আজ প্রায় ফাঁকা জাতীয় স্মৃতিসৌধ। 

স্মৃতিসৌধের ভেতরে প্রবেশ করা কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবার কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা স্মৃতিসৌধে আসায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। ব্যাপক নিরাপত্তা বেষ্টনীর কারণে জনসমাগম এবার অনেক কম হয়েছে। এখন যারা আসছে সাভার ও এর আশপাশের লোকজন ছুটির দিন হওয়ায় বেড়াতে আসছেন।

স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে এবার জনসমাগম নেই

স্মৃতিসৌধে ঘুরতে আসা নাসিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি আমার ছোট ছেলেকে নিয়ে ঘুরতে এসেছি। তাকে আমাদের দেশের ইতিহাসের কথা জানাতে চাই। পরিচয় করিয়ে দিতে চাই দেশের গৌরব গাঁথা স্বাধীনতার সঙ্গে। সকালে এসে বাসায় ফিরে গিয়েছিলাম। প্রবেশ করতে দেয়নি। পরে শুনলাম দুপুর ১টা থেকে ভেতরে প্রবেশ করা যাবে। আবার বাসা থেকে আসলাম। প্রতিবছর অনেক লোকজন আসে এখানে, কিন্তু এবার অনেক কম লোক এসেছে।

ঘুরতে আসা পোশাক শ্রমিক হালিমা বলেন, প্রতি বছরই আমরা সকালে আসি বিকেলে চলে যাই। কিন্তু এবার সকালে আসতে পারিনি। বাসা থেকেই দেরিতে বের হয়েছি। আগে তো লোকজনের জন্য ভেতরে ঢোকা কষ্টকর ছিল। কিন্তু এবার লোকসমাগম অনেক কম। গেট ফাঁকা। এবার লোকজন কম হওয়ায় ঘুরতেও ভালো লাগছে না।

এ ব্যাপারে জাতীয় স্মৃতিসৌধের উপসহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, জাতীয় স্মৃতিসৌধে ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে সর্বসাধারণের প্রবেশের ওপর কিছুটা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। দুপুর ১টায় সর্বসাধারণের জন্য দ্বিতীয় দফায় স্মৃতিসৌধের ফটক উম্মুক্ত করা হয়েছে। ধীরে ধীরে লোকজন আসছে। এছাড়া সকালে প্রথম ধাপে লোকসংখ্যা বেশি ছিল। তারা শ্রদ্ধা নিবেদন করে চলে গেছেন। 

প্রসঙ্গত, স্বাধীনতা দিবসের প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সকাল ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত জনসাধারণের জন্য উম্মুক্ত করে দেওয়া হয় জাতীয় স্মৃতিসৌধ। পরে ভারতের প্রাধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শ্রদ্ধা জানাতে আসায় ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত জনসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। দুপুর ১টায় আবার স্মৃতিসৌধের ফটক উন্মুক্ত করা হয়। 

মাহিদুল মাহিদ/আরএআর