বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী চার প্রার্থীর ৯ কর্মীকে আটকের অভিযোগ পাওয়া গেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। প্রার্থীরা বলছেন, একটি বিশেষ পক্ষকে সুবিধা পাইয়ে দিতে হয়রানি করতেই আটক অভিযান চালাচ্ছে। 

শুক্রবার (২ জুন) গভীর রাতে সিটি কর্পোরেশনের ২৪, ২৫, ৩০ নং ওয়ার্ড থেকে ৭ জনকে এবং শনিবার (৩ জুন) দুপুরে ৫ নং ওয়ার্ড থেকে দুইজনকে আটক করা হয়।

এদরে মধ‌্যে ছয়জন সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারী কাউন্সিলর প্রার্থীর কর্মী ও তিনজন সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা আহসান হাবিব কামালের ছেলে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপনের কর্মী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেয়র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপনের নির্বাচনের থানার সমন্বয়ক রমজান, কর্মী মুন্টু মিরা ও মোনায়েমকে গতকাল রাত ৩টার দিকে বাসা থেকে থানায় ডেকে নিয়ে আটকে রাখে।

রুপন বলেন, এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ আমার কর্মীদের হয়রানি করতে ডেকে নিয়ে আটকে রেখেছে। সরকার-প্রশাসন জেনে গেছে তাদের ভোট নেই, নৌকার প্রার্থীর পরাজয় নিশ্চিত। তাই আমরা যেন মাঠে না নামতে পারি সেজন‌্য পুলিশ-প্রশাসন ব‌্যবহার করে উদ্দেশ‌্যমূলকভাবে কর্মীদের তুলে নেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, সকালে আমি থানায় গিয়েছিলাম। কেন ও কি মামলায় তিন কর্মীকে আটক করা হয়েছে তার কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি পুলিশ। নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে সুবিধা পাইয়ে দিতে পুলিশ এমন আচরণ করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। 

এয়ারপোর্ট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন‌্য তিনজনকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তবে কোন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ তা নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি ওসি।

একই রাতে ২৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী সাফিন মাহমুদ তারিক খানের তিনজন, ২৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইদুর রহমান জাকিরের ছোট ভাই সাবেক ছাত্রদল নেতা মামুন মোল্লাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় কোতোয়ালি থানা পুলিশ।

সাফিন মাহমুদ তারিক দুপুরে মুঠোফোনে বলেন, রাতে তিনজনকে নিয়ে থানায় আটকে রাখে। দুপুরের পর আমি গিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে আসি। কি কারণে নেওয়া হয়েছিল তার কিছুই পুলিশ বলতে পারেনি। 

তিনি বলেন, নির্বাচনে আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে এবং হয়রানি করতেই আমার কর্মীদের থানায় নিয়ে আটকে রাখা হয়েছিল।

২৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাইদুর রহমান জাকির বলেন, আমার ছোট ভাইকে হয়রানিমূলক থানায় নিয়ে আটকে রাখা হয়েছিল। দুপুরের পর তাকে ছেড়ে দিয়েছে। আমিও জানি না কি কারণে আমার ভাইকে পুলিশ নিয়ে গেল।

ওদিকে শনিবার (৩ জুন) দুপুরে ৫ নং ওয়ার্ডের পলাশপুরে কাউন্সিলর প্রার্থী কেফায়েত হোসেন রনির দুইজন কর্মীকে আটক করে কাউনিয়া থানা পুলিশ। পুলিশ সদস‌্য তাদের আটক করলে তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা জড়ো হয়ে আপত্তি জানায়। একপর্যায়ে আটককৃত কর্মী সবুজ ও বাবুকে ঘটনাস্থলে ছেড়ে দিয়ে আসে বলে জানিয়েছেন সবুজের বড় ভাই মজনু। আটকের ৪০ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, সবুজ পুলিশকে উদ্দেশ‌্য করে বলছেন ‘সালেক মিয়ার ইলেকশন না করায় পুলিশ দিয়ে ধরাইসে।’ ওই ওয়ার্ডে কেফায়েত হোসেন রনি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সালেক।

এ বিষয়ে কাউনিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহমান মুকুল বলেন, পলাশপুরে কি ঘটনা ঘটেছে তা সর্ম্পকে এখনো আমি অবহিত নই। তবে দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন‌্য আনা হয়েছিল। তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। 

সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর