ফরিদপুরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া চিকিৎসক পার্থ সাহা (৫০) জামিন পেয়েছেন। রোববার (৪ জুন) দুপুরে শুনানি শেষে জামিন মঞ্জুর করেন ফরিদপুর এক নম্বর আমলি আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তরুন বাছাড়।

গত ৩১ মে রাতে চিকিৎসক পার্থ সাহাকে শহরের ঝিলটুলী মহল্লায় অবস্থিত সোনার তরী আবাসন ভবনের তৃতীয় তলায় তার ফ্লাট থেকে গ্রেপ্তার করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার পুলিশ। এর আগে গত ২৫ মে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় পার্থকে একমাত্র আসামি করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন ওই সোনার তরী আবাসন ভবনের পঞ্চম তলার একটি ফ্লাটের মালিক অবসরপ্রাপ্ত জেলা ত্রাণ ও পুণর্বাসন কর্মকর্তা মহাদেব সাহা (৭০)।

কোতোয়ালি থানা সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ মে চিকিৎসক পার্থ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তার নিজস্ব আইডি থেকে কারও নাম উল্লেখ না করে মহাদেব সাহাকে উদ্দেশ্য করে একটি পোস্ট দেন। কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা মামলায় ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে আক্রমাত্মক, মিথ্যা ভয়ভীতি প্রদর্শন ও বিভিন্ন মানহানীকর বক্তব্য প্রদান করে বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশ করে মানহজানির ঘটনা ঘটানোর অভিযোগে ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিভিন্ন ধারায় এ মামলাটি দায়ের করা হয়।

ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুজন বিশ্বাস জানান, গত ৩১ মে রাতে নিজ ফ্লাট থেকে পার্থ সাহাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন ১ জুন বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। ওইদিনই তার জামিনের আবেদন নাকচ করে দিয়ে তাকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

এ মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী আরমান রিমন জানান, রোববার দ্বিতীয়বারের মতো পার্থ সাহার জামিনের আবেদন জানালে আদালত তা মঞ্জুর করেন। বিকেল পৌনে তিনটার দিকে চিকিৎসক পার্থ সাহা জেল হাজত থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।

আইনজীবী আরমান রিমন আরও বলেন, পার্থ ফেসবুকে কারও নাম উল্লেখ করে কোনো কথা লেখেননি। এক্ষেত্রে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা যথাযথ হয়নি।

জানতে চাইলে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল বলেন, অভিযোগ দায়েরের পর প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পাওয়ার পরই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এ মামলাটি এজাহারভুক্ত করা হয়েছে। একজন ফেসবুকে আরেকজনের উদ্দেশ্যে ইঙ্গিত করে লিখেছেন এবং তিনি সংক্ষব্ধ হয়েছেন এজন্যই এ মামলা। সংক্ষুব্ধ না হলে কিংবা পারস্পারিক বোঝাপোড়া না হওয়ায় বিষয়টি মামলা পর্যন্ত গড়িয়েছে। তবে যে যুক্তিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে তার যতার্থতা রয়েছে।

জহির হোসেন/এমএএস