চা দিবসে চা পাতার ন্যায্য দামের দাবি জানালেন পঞ্চগড়ের চা চাষিরা। বাগান থেকে উত্তোলিত চা পাতা ৪০ টাকা দর নির্ধারণের দাবিতে রোববার (৪ জুন) বেলা ১১টায় পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কের চৌরঙ্গী মোড়ে মানববন্ধনের আয়োজন করে চা বাগান সমিতি।

মানববন্ধনে চা বাগান মালিক সমিতির সভাপতি দিদারুল আলম, আনিসুজ্জামানসহ বক্তারা ৯ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবি জানান। দাবিগুলো হলো, অবিলম্বে অকশন মার্কেট দ্রুত বাস্তবায়ন, কাচা চা পাতার উপর কর্তন বন্ধ, ফ্যাক্টরিতে দালালের মাধ্যমে পাতা নেওয়া বন্ধ করা, সরাসরি চা চাষিদের কাছে পাতা ক্রয়, চা চাষিদের পাতার টাকা বাকি রাখা বন্ধ ও চা কারখানাতে চাষিদের কাচা পাতার পাওনা টাকা নগদ পরিশোধ করা, রশিদে সব পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করে কোম্পানির সিল স্বাক্ষর প্রদান করার দাবি জানান তারা।

বক্তারা বলেন, আমরা তো চাষি, রাজপথে নামার কথা নয়। আন্দোলন করার কথাও নয়। যারা প্রধানমন্ত্রীর লাগানো চায়ের পাতার মান খারাপ বলে ব্লাক মার্কেটে সরকারের কর ফাঁকি দিয়ে সিন্ডিকেট করে যাচ্ছেন তাদের মুখোশ খুলে দেওয়া হোক। এজন্য ব্লাক মার্কেটে ভালো মানের চা বিক্রি বন্ধ করতে প্রশাসনের পদক্ষেপ প্রয়োজন। একই সঙ্গে ভরা মৌসুমে কারখানায় রেশনিংভাবে চালু রেখে কৃত্রিম সংকট তৈরি না করে প্রতিটি কারখানায় অন্তত ৫০ ভাগ ক্যাপাসিটি রাখা ও সরকারিভাবে চা ফ্যাক্টরি প্রতিষ্ঠার দাবি জানান চা বাগান মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দরা।

নাজমুল, আমিনার ও মানিকসহ কয়েকজন চা চাষি বলেন, আমরা চা চাষে ক্ষুদ্র চাষি। আমরা কেউ এক বিঘা, কেউ দুই বিঘা জমিতে চা বাগান করেছি। কিন্তু চা পাতার দাম পাচ্ছি না। গত কয়েকদিন ধরে কাচা পাতা বিক্রির জন্য কারখানাগুলোতে ঘুরছি। অনেক সময় কারখানার মালিকদের সঙ্গে বাগানে চা পাতা তুলতে হয়। সময় মতো পাতা না নেওয়ায় বাগানে পাতা বড় হয়ে যাচ্ছে। কারখানাগুলো সময়মতো আমাদের কাছ থেকে পাতা নিলে তাহলে মান অনুযায়ী ৪-৫ পাতা পর্যন্ত দিতে পারতাম। 

পঞ্চগড় আঞ্চলিক চা বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমির হোসেন জানান, চা উৎপাদনে রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে পঞ্চগড়ে। ২০২২ সালে এ জেলায় এক কোটি ৭৭ লাখ ৭৯ হাজার কেজি চা উৎপন্ন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ২৬০ কোটি টাকা। দেশে মোট উৎপাদিত চায়ের ১৯ শতাংশ চা পঞ্চগড়ে উৎপাদিত হয়েছে। এবার দুই কোটি কেজি চা উৎপন্ন হবে বলে আশা করছেন চা সংশ্লিষ্টরা। বর্তমানে নিবন্ধিত চা বাগান ৯টি, অনিবন্ধিত ২১টি এবং ক্ষুদ্রায়তন চা বাগান আট হাজার ৩৫৫টি, নিবন্ধিত দুই হাজার ৫৩টিতে ১২ হাজার ৭৯ একর জমিতে চায়ের আবাদ হয়েছে। চা শিল্প ঘিরে ২৩টি চা কারখানা স্থাপিত হয়েছে। আশা করছি চলতি মাসেই দেশের তৃতীয় চা নিলাম কেন্দ্র চালু হচ্ছে। এটা হলে চা চাষিরা চা পাতার দাম পাবেন।

এসকে দোয়েল/এমএএস