যশোরে বেড়েছে তাপদাহ। সেই সঙ্গে বেড়েছে অস্বাভাবিক লোডশেডিং। তীব্র গরম যশোরবাসীর রাতের ঘুমও যেন কেড়ে নিয়েছে। দিনে-রাতে সমানে লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ শিশু থেকে শুরু করে নানা বয়সী মানুষ।

এদিকে গরমের যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে ক্রেতারা ভিড় করছেন ইলেকট্রনিক্সের দোকানে। চাহিদা শুধুমাত্র একটি চার্জার ফ্যান। আর ক্রেতাদের এমন চাহিদার সময়ে বাজার পাওয়া যাচ্ছে না চার্জার ফ্যান। ক্রেতাদের অভিযোগ, বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে চার্জার ফ্যান দ্বিগুণ দামে বিক্রি করা হচ্ছে। অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ফ্যান সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে বিদেশি কোম্পানিগুলো।

যশোর শহরের লালদিঘির পাড়, মাইকপট্টি মার্কেট সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি ইলেকট্রনিক্সের দোকানে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। কোনো কোনো ক্রেতা অধিক দাম শুনে পিছু পা হয়ে ফিরে যাচ্ছেন, আবার অনেক ক্রেতা হিমশিম খেলেও উচ্চমূল্য দিয়ে চার্জার ফ্যান কিনে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। 

অন্যদিকে দোকানিরা কয়েকটি ফ্যান সামনে ডিসপ্লে করে একদর লাগিয়েছেন। ফ্যান ক্রেতাদের উদ্দেশ্যে তাদের একটাই কথা ‘একদর নিলে নেন, না নিলে যানগা।’

শহরের টালিখোলা এলাকার বাসিন্দা আলামিন হোসেন বলেন, বাড়িতে দুই মাসের একটি শিশু রয়েছে। রাতে তিন-চারবার লোডশেডিং হয়। বাচ্চা গরমে ঘুমাতে পারে না। আজকে বাধ্য হয়ে চার্জার ফ্যান কিনতে আসলাম। এসে দেখি চার্জার ফ্যান মার্কেট থেকে উধাও।

কাজীপাড়ার বাসিন্দা বিল্লাল হোসেন বলেন, কোনো দোকানে গিয়ে চার্জার ফ্যান আছে কি না জিজ্ঞাসা করলে বলছে সাপ্লাই নাই। কোনো কোনো দোকানি বলছেন- আছে তবে ১৬ ইঞ্চি ৮ হাজার টাকা দাম। তাহলে ছোট, মাঝারি সাইজের ফ্যানগুলো গেল কোথায়? কোনো কোনো ব্যবসায়ী ফ্যানে একদর লাগিয়েছেন। 

শহরের ধর্মতলার বাসিন্দা ইসমাইল বলেন, অনেক দরাদরির পর ৪ হাজার টাকার ফ্যান ৭ হাজার টাকায় কিনছি। কি করবো বাড়িতে বাচ্চারা কারেন্ট চলে গেলে ঘুমাতে পারে না। আমাদের ধারণা ব্যবসায়ীরা ফ্যানের কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছেন। এ বিষয়ে প্রশাসনের নজরদারি দরকার। 

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে আজ পর্যন্ত চাহিদার সময়ে কোনো জিনিস সস্তা বা সহজলভ্য দেখলাম না। চিনি, পেঁয়াজ তেলের মতো ফ্যানও স্টক আউট হয়ে যায়। 

মাইকপট্টি এলাকার ইলেকট্রনিকস ব্যবসায়ী লাবলু বলেন, আপাতত চায়না কোম্পানি চার্জার ফ্যান সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। যা আছে বাংলাদেশি পণ্য, তাও আবার দাম বেশি। 

পার্শ্ববর্তী ব্যবসায়ী এরশাদ ইলেকট্রনিক্সের এরশাদ বলেন, ফ্যানের চাহিদা বাড়ায় বাজারে ফ্যান নেই, স্টক আউট। কোম্পানিকে টাকা দিয়েও আমরা মাল পাচ্ছি না। বর্তমানে ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত দামেরও ফ্যান বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। 

যশোর ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ওয়ালিদ বিন হাবিব ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা বাজারে ফ্যানের চাহিদা বাড়ার বিষয়ে জেনেছি, আমরা বাজার তদারকি করবো। কেউ কৃত্রিম সংকট তৈরি করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ্যান্টনি দাস অপু/আরএআর