‘বৃষ্টি হোক, একবার বৃষ্টি হোক/দ্বিধার আকাশ ছিঁড়ে ঝরুক প্রেরণা-আর্দ্র জল....’। রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর ‘বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা’ কবিতার পঙ্‌ক্তিমালা যেন হয়ে উঠেছিল সকলের বাস্তবিক প্রার্থনা, এক তীব্র প্রত্যাশার নাম। অবশেষে সেই প্রত্যাশার পারদ খুলে দমকা হাওয়ার সঙ্গে নেমেছে একঝাঁক বৃষ্টি। যারপরনাই বেশ কয়েক দিনের তীব্র দাবদাহে অতিষ্ঠ হয়ে পড়া নগরজীবনে নেমে এসেছে স্বস্তি।

শুক্রবার (৯ জুন) সকাল থেকেই ময়মনসিংহ নগরীর আকাশ কিছুটা মেঘলা ছিল। বেলা ১২টা থেকে বইতে থাকে দমকা হাওয়া। সাড়ে ১২টায় বৃষ্টির দেখা পায় নগরবাসী। ঝুম বৃষ্টির স্থায়িত্ব ছিল প্রায় ২০ মিনিট। এরপর আরও আধা ঘণ্টা ছিল গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। এতে কয়েক দিনের তপ্ত আবহাওয়াকে মুহূর্তেই শীতল করে দেয়। প্রতীক্ষিত এই বৃষ্টি জনজীবনে শান্তির পরশ বুলিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি প্রাণীকুলকেও দিয়েছে স্বস্তি। বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিতে অনেককেই ভিজতে দেখা যায়।

বৃষ্টির আভাস পেয়েই মনকে শীতল করতে নগরীর জয়নুল আবেদিন পার্কে ছুটে আসেন কবি শামীম আশরাফ। পার্কের সবুজ প্রকৃতির মাঝে বসে তার মতো আরও অনেকেই উপভোগ করেন বৃষ্টিময় মুহূর্ত।

শামীম আশরাফ ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাতাসের ডাক, বৃষ্টির গুঁড়ি গুঁড়ি শব্দ আমাকে থাকতে দেয়নি ঘরে। বেরিয়ে চলে গেলাম ব্রহ্মপুত্র পাড়ের সবুজ শোভায়। বাতাসের সম্মিলনে ধুলোদের উড়াউড়ির সঙ্গে প্রাণ যেন গেয়ে উঠে উচ্ছ্বসিত গান। ভীষণ দাবদাহের পর জীবনকে শীতল করে দেওয়া আকাশের এমন আয়োজনে স্বস্তিতে মেতে উঠেছিলাম। এই মেতে উঠা কেবল আমার জন্য নয়। প্রতিটি মানুষ, প্রতিটি প্রাণ পেয়েছে স্বস্তি। চায়ের কাপ ছুঁয়ে যাচ্ছিল চিনির দানার মতো বৃষ্টির ফোঁটা। পাখিদের কিচিরমিচির ডাকের সঙ্গে আমি মিশে গিয়েছিলাম।

এর আগে, তীব্র দাবদাহ থেকে মুক্তি পেতে এবং বৃষ্টি কামনা করে বৃহস্পতিবার ইসতিসকার নামাজ আদায় করা হয়। নামাজ শেষে বৃষ্টির জন্য কয়েক হাজার মুসল্লি আহাজারি করে মহান আল্লাহর করুণা প্রার্থনা করেন।

উবায়দুল হক/এমজেইউ