আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ভোটের আর মাত্র এক দিন বাকি। এ উপলক্ষ্যে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন। শনিবার শেষ হয়েছে প্রচার-প্রচারণা। টানা ১৬ দিন নিরবচ্ছিন্ন প্রচার-প্রচারণায় নগরবাসীর মাঝে তুমুল আলোচনায় চলে এসেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত। তিনি বঙ্গবন্ধুর ভাগনে। মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকেই তিনি যেমন আলোচনায় আছেন তেমনি ভোটেও জয়ী হবেন বলে বিশ্বাস করেন। আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত নির্বাচনের প্রস্তুতিসহ সমসাময়িক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন ঢাকা পোস্টের নিজস্ব প্রতিবেদক সৈয়দ মেহেদী হাসানের সঙ্গে।

ঢাকা পোস্ট : এক দিন পরেই ভোট। কী কারণে মানুষ আপনাকে ভোট দেবে বলে মনে করেন?

আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ : বিগত দশ বছর বরিশালের মানুষ উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত ছিলেন। যোগ্য পরিচালনার অভাব আর চরম অব্যবস্থাপনায় সিটি কর্পোরেশনের বাসিন্দারা কাঙ্ক্ষিত সেবা ও সম্মান পাননি। নাগরিক অধিকার তারা পাননি। আমি নগরবাসীকে আশ্বস্ত করেছি, তাদের সেবা ও সম্মান ফিরিয়ে দেওয়া হবে। মানুষের বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। তারা মনে করছেন, আমি তাদের সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারব। এই বিশ্বাস আমি তাদের মধ্যে জাগাতে পেরেছি। আমি প্রত্যেককে আশ্বস্ত করেছি যে সার্বক্ষণিক সেবা দেব।

ঢাকা পোস্ট : নির্বাচিত হলে সর্বপ্রথম কোন কাজে হাত দেবেন?

আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ : সিটি কর্পোরেশন জনগণের প্রতিষ্ঠান। এতদিন জনগণ নানা কারণে তাদের প্রাপ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আমি নির্বাচিত হলে প্রথমেই জনগণের জন্য নগরভবন উন্মুক্ত করে দেব। এই প্রতিষ্ঠানটি হবে জনসেবার।

ঢাকা পোস্ট : পূর্বের মেয়রদের পাশে আরও কয়েকজন ছায়া মেয়র থাকতেন, একটি বলয় তৈরি হতো। আপনার ক্ষেত্রে?

আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ : এসব কিছুই থাকবে না। দেখুন, আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। আমার সন্তানরা বিদেশে উচ্চশিক্ষিত এবং প্রতিষ্ঠিত। সুতরাং আমি লোভ করবো কী জন্য? নেত্রী (শেখ হাসিনা) আমাকে জনসেবার জন্য বরিশালে পাঠিয়েছেন। আমি সরাসরি মানুষের কথা শুনব। এর মাঝখানে কোনো স্তর থাকবে না। সিটি কর্পোরেশন ঘিরে চাঁদাবাজি থাকবে না। মানুষের ওপর অযৌক্তিক কিছু চাপিয়ে দেওয়া হবে না। বরিশালকে নতুন করে গড়ে তুলতে হাত দেব। এজন্যই আমার স্লোগান ‘নতুন বরিশাল, জয় শেখ হাসিনার’।

ঢাকা পোস্ট : প্রচার-প্রচারণা শেষ। বিজয়ের পথে আপনি কতটুকু আত্মবিশ্বাসী?

আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ : আমার বাবা শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত, মামা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তারাই আমার আদর্শ। রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত না হলেও রাজনীতি আমি ধারণ করি। আমি চাই আমার বাবা যেমন দ্ব্যর্থহীনভাবে জনসেবা করেছেন, মামা একটি জাতিকে মুক্ত করে গেছেন। আমিও তাদের অনুসরণ করে এগিয়ে যেতে চাই। প্রচার-প্রচারণায় নেমে সাধারণ মানুষের যে ভালোবাসা ও আন্তরিকতা পেয়েছি তাতে আমি নিশ্চিত ভোটে আমার জয় হবে।

ঢাকা পোস্ট : আওয়ামী লীগের একাংশ অসহযোগিতা করছে বলে একটি কথা চালু রয়েছে। নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণায়ও অনেককে পাশে দেখা যায়নি। আপনি কী মনে করেন?

আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ : নির্বাচনে অনেক বিষয় সামনে আসে। সব বিষয়ই সত্য এমনটি ধরে নেওয়া ঠিক না। যেমন নগরীর যত ভোটার আছে সবাই আমাকে ভোট দেবেন এমন আশা করাটা অনুচিত। অর্থাৎ নির্বাচনে অনেক ধরনের শঙ্কা তৈরি হবে। সবই বিশ্বাসযোগ্য নয়। দলের সবাই আমাকে ভোট দিয়েছে কিনা, তা বোঝা যাবে নির্বাচনের পর।

ঢাকা পোস্ট : প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা অভিযোগ করেছেন ভোটের মাঠে প্রশাসন আপনাকে সহায়তা করছে। এ বিষয়ে আপনি কী বলবেন?

আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ : প্রশাসন সকল ক্ষমতার উৎস, আমি তা বিশ্বাস করি না। কে মেয়র হবেন, কে হবেন না তা নির্ভর করে জনগণের ভোটের ওপর। আমার পক্ষ থেকে কাউকে বিব্রত করার প্রশ্নই আসে না। এমনটি হোক তা আমিও চাই না। জনগণ আমাকে গ্রহণ করেছে। সুতরাং এসব আমি করতে যাব কেন?

ঢাকা পোস্ট : নির্বাচনে বড় একটি রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করেনি। তাদের ভোটের ব্যাপারে আপনি আশাবাদী?

আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ : মানুষ তাদের উন্নয়ন চায়। এজন্য স্থানীয় সরকার নির্বাচনে রাজনৈতিক দল বিবেচনা খুবই গৌণ। আমি বিশ্বাস করি বিএনপির অনেকেই আমার পাশে আসবে। কারণ তারা আমাকে বিশ্বাস করে। বিএনপির মধ্যে অনেকেই আমাকে গ্রহণ করেছে। আমি দলমত নির্বিশেষে নগরীর উন্নয়ন করবো। সুতরাং সকলেই আমার পাশে থাকবেন।

এমজেইউ