ঘরের মেঝেতে পাশাপাশি দুটি কবর। কবরের এক পাশে চাল ভর্তি গ্লাসে জ্বলন্ত আগরবাতি আরেক পাশে ওয়ান টাইম প্লেটে কাটা আম। উপরে লাল কাপড় টানানো, সামনে কয়েকটি আসন। এক সপ্তাহ আগে নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার মিরাট ইউনিয়নের কৌনুজ গ্রামে পীরের সন্তুষ্টি অর্জনে এমন অবাক করা কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে আলোচনায় এসেছেন দম্পত্তি খোরশেদ আলম ও চায়না বেগম। তবে শেষ অবধি কবর দুটি রক্ষা করতে পারেননি তারা।

শুক্রবার (৯ জুন) প্রশাসনের তোপের মুখে পড়ে কবর দুটি ভেঙে ফেলতে হয় তাদের। পরে সোমবার (১২ জুন) ঘটনাটি গণমাধ্যমের সামনে আসে। 

কনৌজ গ্রামের বাসিন্দারা জানান, এমন অবাক করা কাণ্ড এর আগে কখনো দেখিননি তারা। প্রথমে বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। পরে কবরটি খননের কারণ জানতে পেরে পুরো গ্রামে আতঙ্ক বিরাজ করছিল। খবরটি পেয়ে আশপাশের কয়েকটি গ্রাম থেকে অনেকেই কবরটি দেখে গেছেন।

কবর খননের কারণ জানতে চাইলে খোরশেদ আলম বলেন, স্বপ্নে পাশাপাশি দুটি কবর খননের নির্দেশ দিয়েছিলেন গুরু। ওই দুটি কবরে গুরু এবং দাদা পীর একসঙ্গে থাকবেন বলে জানিয়েছিলেন। এজন্য কবর দুটি খনন করেছিলাম। কবরের উপর তাম্বু টানানো, আগরবাতি জ্বালানোর পরামর্শও গুরুর থেকেই পেয়েছিলাম। এটা করে আমি আবারও বিদেশে গেলে সংসারে উন্নতি হতো।

চায়না বেগম বলেন, স্বামীর পরিবারের প্রত্যেকেই গুরুর মুরিদ। তাই তার স্বপ্নে দেখা কবর নির্মাণে আমিও সাহায্য করেছি। এর আগে ওইখানে ঘর ছিল। ঘরটি ফাঁকা করে সেখানে কবর তৈরি করা হয়। কবরটি নিয়ে এতো হৈ চৈ পড়ে যাবে বুঝিনি।

রাণীনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিষয়টি জানার পর কবর দুটি ভেঙে ফেলার নিদের্শনা দেওয়া হয়েছিল। পরে সেটা ভেঙে ফেলা হয়। ভবিষ্যতে যাতে কেউ এমন কর্মকাণ্ডে না জড়ায় সে বিষয়ে পুলিশ সজাগ থাকবে।

আরকে