সকালে দেওয়া হবে ওএমএসের আটা, রাত ৯টায় দীর্ঘ লাইন
সকাল ৯টায় দেওয়া হবে ওএমএসের আটা। এই সুবিধা পেতে হলে লাইনে দাঁড়িয়ে নিতে হবে টোকেন। ভোর ৫টা থেকে মোট ২৫০ জনকে দেওয়া হবে টোকেন। তাই আগের দিন রাত ৯টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছেন অনেকে। ভোর ৫টায় কেউ টোকেন নিতে আসলে হতাশ হয়ে ফিরতে হয়। ফলে সরকারের ওএমএস কার্যক্রমের আওতায় ৯৬ টাকায় ৪ কেজি আটা পেতে শত শত নারী-পুরুষ নির্ঘুম রাত কাটান। গতকাল সোমবার (১২ জুন) রাতে বগুড়া শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে এমন দৃশ্য দেখা যায়।
বগুড়া শহরের সেউজগাড়ি আমতলার মোড়ে মঙ্গলবার (১৩ জুন) ভোর ৫টা থেকে ওএমএসের আটা কিনতে আসা নারী-পুরুষদের মাঝে টোকেন বিতরণ শুরু হয়। বিক্রি শেষ হয় দুপুর আড়াইটায়।
বিজ্ঞাপন
লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা একাধিক নারী-পুরুষ জানান, তাদের কেউ কেউ গতকাল রাত ৯টা/১০টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন। সারারাত নির্ঘুম থেকেও যদি খানিটটা সুবিধা পান তাতে সংসারে কিছুটা হলেও উপকার হবে।
এদিকে ওএমএসের আটা কিনতে এসে লাইনে ঠাঁই না পেয়ে হতাশ হয়ে ফেরত গেছেন অনেকেই। ভোর ৫টার দিকে আসা মাজেদা বেগম (ছদ্মনাম) বলেন, রাতে লাইনে দাঁড়াতে পারিনি। ভোরে ঘুম থেকে জেগে দ্রুত এসেছি আটা নিতে। কিন্তু রাতেই লাইন পূর্ণ হয়ে গেছে, এজন্য বাড়িতে ফেরত যাচ্ছি।
বিজ্ঞাপন
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, আমি প্রায় ১০ কিলোমিটার দূর থেকে এসেছি। লোক-লজ্জার ভয়ে নিজ এলাকায় লাইনে দাঁড়াইনি। খোলা বাজারে ৪ কেজি আটা কিনতে প্রায় ২৬০ টাকা লাগে। কিন্তু ওএমএসের ৪ কেজি আটা মাত্র ৯৬ টাকায় পাচ্ছি। অভাবের সংসারে ১০টাকা বাঁচলেও তা সংসারের জন্য কিছুটা সাশ্রয়।
শহরের সেউজগাড়ি আমতলার মোড়, গোয়ালগাড়ি এলাকার মোস্তফাবিয়া মাদ্রাসা মোড়, চেলোপাড়া, বৃন্দাবনপড়া ও বনানী মোড়ে গত ৭ জুন থেকে আজ ১৩ জুন পর্যন্ত ওএমএসের কার্যক্রম চলেছে। সাধারণত সকাল ৯টার দিকে আটা বিতরণ করা হয়। কিন্তু স্ব-স্ব এলাকার জন্য নির্ধারিত ২৫০ জনকে বাছাইয়ের প্রক্রিয়ায় যেন বিশৃঙ্খলা না হয় সেজন্য লাইনে দাঁড়ানো ব্যক্তিদের মধ্যে ভোর ৫টা থেকেই জাতীয় পরিচয়পত্রের ভিত্তিতে টোকেন বিতরণ করা হয়। পরে নির্ধারিত ডিলার সেই টোকেনের মাধ্যমে প্রত্যেকের কাছে ৪ কেজি করে আটা বিক্রি করেন।
সেউজগাড়ি এলাকার খাদ্য অধিদপ্তরের ডিলার সোনিয়া পারভীর জানান, গত ৭ জুন এই প্রকল্পটি শুরু হয়েছে। প্রথম দিনে এ রকম চাপ ছিল না। তবে দ্বিতীয় দিনের পর থেকে চাপ সৃষ্টি হয়েছে। পুরো শহরজুড়ে মাত্র পাঁচটি পয়েন্টে ওএমএসের আটা বিক্রি হচ্ছে। প্রতি পয়েন্টে দিনে মাত্র ২৫০ জনের বরাদ্দ রয়েছে। ফলে স্বল্পমূল্যে আটা নিতে প্রথম রাত থেকেই লাইনে দাঁড়াতে শুরু করেছেন সবাই। আজ শেষ দিনে দুপুরের মধ্যে আটা বিক্রির কার্যক্রম শেষ হয়েছে।
আরএআর