রংপুরের বদরগঞ্জে স্কুলছাত্রীকে আপত্তিকর প্রস্তাব দেওয়ার ঘটনার রেশ না কাটতেই এবার লোহানীপাড়া দাখিল মাদরাসার সুপার ও সহকারী শিক্ষিকার অন্তরঙ্গ মুর্হূতের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই দুই ঘটনায় এলাকায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে একই উপজেলার দুই প্রতিষ্ঠানের দুই প্রধানের এমন ঘটনায় এলাকার অভিভাবকরা সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বীগ্ন হয়ে পড়েছেন।

মঙ্গলবার (২০ জুন) দুপুরে লোহানীপাড়া দাখিল মাদরাসার সুপার ও সহকারী শিক্ষিকার অন্তরঙ্গ ছবি ভাইরালের বিষয়টি নিশ্চিত করেন অত্র মাদরাসার সহকারী সুপার কাজী নুরুল ইসলাম। এদিকে ছবি ফাঁসের পর থেকে ওই শিক্ষক-শিক্ষিকা দুইজনেই গা ঢাকা দিয়েছেন। দুদিন ধরে তারা প্রতিষ্ঠানেও আসছেন না।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, মাদরাসা সুপার আজিজার রহমানের বাড়ি উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ওসমানপুর গ্রামে। আর সহকারী শিক্ষিকার বাড়ি বগুড়া জেলায়। তিন বছর আগে এনটিআরসির আওতায় আইসিটির সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়ে ওই মাদরাসায় যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে উপজেলা পরিষদের পাশে অস্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। সেখানে মাদরাসা সুপার আজিজার রহমান প্রায়ই যাওয়া আসা করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন, মাদরাসার সুপার ও শিক্ষিকার এমন অন্তরঙ্গ মুর্হূতের ছবি দেখে হতভম্ব হয়ে পড়েছি। যদি তারা এমন অনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকেন তাহলে মাদরাসায় সন্তানদের নিরাপত্তা আমরা কার কাছে পাবো? এখন শিক্ষক-শিক্ষিকারা যদি এমন অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটায় এর প্রভাব তো শিক্ষার্থীদের মধ্যেও পড়তে পারে।

ওই মাদরাসার সহকারী সুপার কাজী নুরুল ইসলাম বলেন, আমি স্মার্ট ফোন ব্যবহার করি না। ওইসব বিষয় বুঝি না। তারপরও আমাকে একজন ওই ছবিগুলো দেখানোর পর আমি সুপারকে বিষয়টি জানিয়েছি কিন্তু তিনি গুরুত্ব দেননি। উল্টো তার দাবি কিছু মানুষ নাকি ষড়যন্ত্র করে এমন ছবি ছড়িয়েছে। তবে ওই ঘটনার পর থেকে সুপার এবং সহকারী শিক্ষিকা মাদরাসায় আসছেন না।

এদিকে সুপার আজিজার রহমান ও সহকারী শিক্ষিকার ফোন বন্ধ থাকায় তাদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

তবে মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সামছুল হক বলেন, পারিবারিক সমস্যা দেখিয়ে সুপার তিন দিনের ছুটি নিয়েছেন। আমি শুনেছি সুপার ও সহকারী শিক্ষিকার অন্তরঙ্গ মুর্হূতের ছবি ভাইরাল হয়েছে। আমি তাদের ওইসব ছবি দেখিনি। তবে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম বলেন, ওই সুপার ও শিক্ষিকার ছবি ভাইরাল হওয়ার বিষয়টি মিডিয়া থেকে জেনেছি। এ রকম ঘটলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, বদরগঞ্জে স্কুলছাত্রীকে আপত্তিকর প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) চম্পাতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর পরদিন শুক্রবার বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির এক জরুরি সভা শেষে অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। এছাড়া ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই লোহানীপাড়া দাখিল মাদরাসার সুপার ও সহকারী শিক্ষিকার অন্তরঙ্গ ছবি ভাইরালের বিষয়টি এখন সবার মুখে মুখে।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমএএস