অপর্ণা সিনেমা হল

কুষ্টিয়ার খোকসার ঐতিহ্যবাহী অপর্ণা সিনেমা হলটির কিছু অংশ ভেঙে সংস্কার করা হচ্ছে। এর আগে করোনাকালীন প্রায় সাত মাস হলটি বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। পরে কয়েক দিন আগে হলটি চালু করলেও ঢিলেঢালাভাবে চলছিল। যে কারণে চারতলাবিশিষ্ট এ হলটির বেশ কিছু অংশ ভেঙে সংস্কারের কাজ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অপর্ণা সিনেমা হলের মালিক আমজাদ হোসেন।

দুই যুগ আগেও কুষ্টিয়া জেলায় ২১টি সিনেমা হল ছিল। যার মধ্যে কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় পাঁচটি, খোকসায় উপজেলায় তিনটি, কুমারখালীতে চারটি, দৌলতপুরে তিনটি, মিরপুরে দুটি, খোকসায় একটি ও ভেড়ামারা উপজেলায় তিনটি। তবে বেশির ভাগ হলেরই অস্তিত্ব নেই। অনেক হল এখন গুদামঘর ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে অপর্ণা সিনেমা হলের মালিক আমজাদ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি ১৯৮৩ সালে সুবর্ণা নামের একটি সিনেমা হল প্রতিষ্ঠা করি। সে সময় মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ ছিল। সপরিবার মানুষ ছবি দেখতে হলে আসত। ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠা করি অপর্ণা সিনেমা হল। কিন্তু ২০০০ সাল থেকে হল ব্যবসায় লোকসান হতে থাকে। এ জন্য ২০১০ সালের দিকে সুবর্ণা হলটি বন্ধ করে দিয়েছি। সে সময় ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে এটি বন্ধ করি।

বর্তমানে সিনেমা হলের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার এখন অপর্ণা সিনেমা হলটি চালু রয়েছে। তবে করোনাকালীন দর্শকের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। বর্তমানে হলটির সংস্কারকাজ চলছে। সিনেমা হলের ব্যবসা ভবিষ্যতেও চালিয়ে যাব, ইনশা আল্লাহ।

হলটি ভাঙা হচ্ছে নাকি সংস্কার, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অপর্ণা সিনেমা হলের বহুতল ভবনটির একটি অংশে সংস্কারকাজ চলছে। সিনেমা হলটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে না। ব্যবসাটিকে ধরে রাখার জন্য হলটিকে মেরামত করা হচ্ছে। যেহেতু সিনেমা হলটি চারতলাবিশিষ্ট, সেহেতু এর নিচতলায় একটি বেসরকারি ব্যাংককে ভাড়া দেওয়ার জন্য কথাবার্তা চলছে। তবে দ্বিতীয় তলা থেকে চারতলা পর্যন্ত এটি সিনেমা হল হিসেবেই থাকবে।

এদিকে স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যমতে, আশির দশকে খোকসা বাজারের একটি পাটের গোডাউন ভেঙে তৈরি হয় প্রথম সিনেমা হল। এরপর অল্প সময়ের মধ্যে এক কিলোমিটারের মধ্যে তিনটি পেক্ষাগৃহের জন্ম হয়।

সুবর্ণা ও অপর্ণা ছাড়াও খোকসায় আশির দশকে নির্মিত মনামী সিনেমা হলটিও কার্যত বন্ধ রয়েছে। আগে ঈদ-পূজার উৎসবে দর্শক হলেও এখন আর কেউ হলে সিনেমা দেখতে আসে না।

এর আগে হলটি ভেঙে গোডাউন করা হচ্ছে, একটি পত্রিকায় এমন একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে, যেটি সঠিক নয় জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে আকাশসংস্কৃতির কারণে ব্যবসায় মন্দা চলছে। কিন্তু যে সংবাদটি প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে আমার বক্তব্য পুরো দেওয়া হয়নি। এটা ঠিক হয়নি।

এনএ