নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার চিরাং ইউনিয়নের সাগুলী গ্রামের মৃত লালু মিয়ার স্ত্রী বৃদ্ধা রেজিয়া আক্তার। বয়স সত্তরেরও বেশি। দুচোখে ঝাপসা দেখেন। কোনো সন্তান নেই তার। বসতভিটেটুকু ছাড়া নেই কোনো জায়গা জমিও। এলাকার লোকজনের দেওয়া সহায়তায় চলে তার জীবন। 

গত ১৫ জুন আকস্মিক ঝড়ে ভেঙে পড়ে রেজিয়ার মাথাগোঁজার ঠাঁই ছোট্ট টিনশেডের ঘরটি। তারপর এক প্রতিবেশীর বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন তিনি। 

বিষয়টি জানতে পেরে গত মঙ্গলবার (২০ জুন) বিকেলে অসহায় রেজিয়ার বাড়িতে ছুটে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাবেরী জালাল। সেখানে গিয়ে ইউএনও রেজিয়া আক্তারের সার্বিক খোঁজ-খবর নেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে চাল, ডাল, তেল, সেমাইসহ প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী তার হাতে তুলে দেন। এ সময় রেজিয়া আক্তারকে সরকারি ঘর প্রদানেরও আশ্বাস দেন ইউএনও। 

এরইমধ্যে শুক্রবার (২৩ জুন) সকালে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনামুল কবীর খানকে সঙ্গে নিয়ে আবারও রেজিয়ার বাড়িতে যান ইউএনও। সেখানে গিয়ে তিনি আপাতত রেজিয়া আক্তারের মাথাগোঁজার জন্য ঢেউটিন দিয়ে ঘরটি নির্মাণ করে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। এ সময় ইউএনও ঘর নির্মাণের জন্য সরকারি বালি, টিন ও নগদ ৬ হাজার টাকা প্রদান করেন এবং ঘর নির্মাণকাজের শুরু করান। 

রেজিয়া আক্তার বলেন, ইউএনও স্যার আমার খোঁজ নিচ্ছেন। আমাকে খাবার দিয়েছেন। এখন ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছেন। এ জন্য আমি খুব খুশি। আল্লাহ ইউএনও স্যারের ভালো করুক। 

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল কবীর খান বলেন, রেজিয়া সত্যি একজন অসহায় মানুষ। তার কেউ নেই। আমরা প্রায় তাকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে আসছি। এবার ইউএনও মহোদয় অসহায় রেজিয়ার পাশে দাঁড়ানোতে স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। 

এ বিষয়ে ইউএনও কাবেরী জালাল বলেন, রেজিয়ার বিষয়টি জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অবগত করার পর তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে ঢেউটিন ও নগদ অর্থ বরাদ্দ দিয়েছেন। তাই অসহায় বৃদ্ধার ঘর নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। তবে এতে ঘরটি নির্মাণ সম্ভব না হলে আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে টাকা দিয়ে হলেও নির্মাণকাজ শেষ করব।      

জিয়াউর রহমান/আরকে