রংপুরের গঙ্গাচড়ায় বিষাক্ত ধোয়া, বর্জ্য, বিকট শব্দ ও ময়লার দুর্গন্ধ থেকে বাঁচতে মাহবুব অটো রাইস মিলের নির্মাণকাজ বন্ধের আকুতি জানিয়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে এলাকাবাসী।

সোমবার (২৬ জুন) দুপুরে উপজেলার চৌধুরীর হাটের প্রধান সড়কের দুই পাশে অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধনে অংশ নেন শতাধিক এলাকাবাসী, শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ী। মানববন্ধনে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে ব্যানার, ফেস্টুন হাতে দাঁড়ান তারা।

স্থানীয় নাগরিক কমিটির সভাপতি আবু তাহের ওরফে আলো চৌধুরীর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন চৌধুরীর হাট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোজাম্মেল হক, নাগরিক কমিটির সদস্য আলো চৌধুরী, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ নেতা আলমগীর হোসেন, হাফিজিয়া মাদরাসার প্রধান শিক্ষক মাহফুজার রহমান, জাতীয় পার্টি নেতা মশিয়ার রহমান, ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম, সাদেকুল পাঠান, গোলাম রব্বানী, নাইমুল ইসলাম, স্থানীয় বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম, লাইলী বেগম, জেন্না বেগম, লাবণী বেগম, শাহজাহান আলী, শিক্ষার্থী রবিউল ইসলাম, শ্রমিক মোকছেদুল ইসলামসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ ‍সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।

এসময় বক্তারা বলেন, এলাকাবাসীর বাধা উপক্ষো করে সেখানে মাহবুব অটো রাইস মিল নির্মাণকাজ করা হচ্ছে। যার প্রাচীর সংলগ্ন রয়েছে ২টি, ২০ গজের মধ্যে রয়েছে ২০টি, ৫০০ গজের মধ্যে শতাধিক বাড়ি-ঘর, ১০০ গজের মধ্যে প্রাচীনতম চৌধুরীহাট, হাফেজিয়া মাদরাসা, নিম্ন-মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সরকারি প্রাথমি বিদ্যালয়। মিলটি নির্মাণকাজ বন্ধ না করেলে ওই এলাকার পরিবেশ বিপন্ন হওয়ার পাশাপাশি কয়েক হাজার মানুষ, ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থী মারাত্বক স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। মিলটি নির্মাণ কার্যক্রম বন্ধে তারা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ এই এলাকায় ফসলি জমির মাঝখানে মাহবুব অটোরাইস মিল কর্তৃপক্ষ প্রশাসন এবং পরিবেশ অধিদপ্তরকে ম্যানেজ করে তাদের স্থাপনা নির্মাণ করছে। আইন অনুযায়ী ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এ ধরনের রাইস মিল নির্মাণ করা সম্পূর্ণ অবৈধ ও অন্যায় কাজ।

বক্তারা আরও বলেন, অটোরাইস মিল নির্মাণ হলে এর বিষাক্ত কালো ধোঁয়া চারপাশে ছড়িয়ে পড়বে। এতে পরিবেশ দূষণ হবার সঙ্গে ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হবে। কৃষি ও কৃষকের ওপর এর মারাত্মক বিরূপ প্রভাব পড়বে। পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের ওপর একটি বিরূপ প্রভাব পড়বে। হাটে ব্যবসার পরিবেশ নষ্ট হলে ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। সেখানকার দুর্গন্ধময় পানি ও কালো ধোঁয়া চাষাবাদের জন্য ক্ষতিকর। এজন্য তারা অবিলম্বে মিলটির নির্মাণকাজ বন্ধের দাবি জানান।

এ ব্যপারে অটো রাইস মিলটির মালিক মাহাবুবার রহমান জানান, ১৯৯৫ সাল থেকে আমি সেখানে চাতাল ব্যবসা করে আসছিলাম। এখন ইউএনও, জেলা প্রশাসক, পরিবেশ অধিদপ্তর, কৃষি মন্ত্রণালয়সহ সকল দপ্তরের অনুমতি নিয়ে সেখানে এগ্রোবেজ অটো রাইস মিলটি নির্মাণ করছি। পরিবেশ বিপন্ন হওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন।
 
পরিবেশ অধিদপ্তরের (রংপুর বিভাগ) পরিচালক ফরহাদ হোসেনের সঙ্গে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।   

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমএএস