সারাদেশে দাম বৃদ্ধিতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে কাঁচা মরিচ। কিশোরগঞ্জেও অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম। সেখানে কাঁচা মরিচের পাইকারি মূল্য ৪শ টাকা এবং খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়।

রোববার (২ জুলাই) সরেজমিনে বড় বাজার, পুরান থানা বাজার ও কাঁচারি বাজারে ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে। একই শহরের কাছাকাছি বাজারে কাঁচা মরিচের পাইকারি দাম ৪শ টাকা কিন্তু খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৬শ টাকা।পাইকারি মূল্য থেকে কেজিতে দুইশ টাকা বেশি বিক্রি কেন করছেন এই প্রশ্নে খুচরা ব্যবসায়ীরা কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। বাজার করতে আসা ক্রেতারা বলছেন ঈদ পরবর্তী সময়ে বাজারে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে কৃষি বাজার কর্মকর্তারা উদাসীনতায় রয়েছেন। প্রশাসন নিয়মিত বাজার তদারকির দায়িত্বে অবহেলা করে যাচ্ছে যার কারণে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা সুযোগে ভোক্তাদের পকেট কাটছেন।

বড় বাজারে কাঁচা মরিচ পাইকারি বিক্রেতা হরি ভক্ত জানান, তাড়াইল থেকে চারশ টাকা কেজি দরে ক্রয় করে এনে আমি এই দামে বিক্রি করছি। আমার কাছ থেকে অন্যান্য ব্যবসায়ীরা কিনে খুচরা বাজারে বিক্রি করবে। গতকাল শনিবার কাঁচা মরিচ পাইকারি বিক্রি করেছি ৬শ টাকা কেজি। আজকে মরিচের দাম একটু কমেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুরান থানার একজন কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী পাইকারি মূল্যে মরিচ কিনেছেন। তিনি বলেন, আমার দোকানে প্রতিদিন ১০ কেজি মরিচ বিক্রয় হয়। দাম বেশি দেখে আমি দুই কেজি কিনেছি। 

বড় বাজারে মরিচ কিনতে আসা সুমন জানান, ১২৫ গ্রাম কাঁচা মরিচ কিনেছি ৫০ টাকা দিয়ে। আমার ৪০ বছর বয়সে জীবনের প্রথমবার এত দাম দিয়ে কাঁচা মরিচ কিনে খাচ্ছি।

কিশোরগঞ্জের কাঁচারি বাজারের সবজি বিক্রেতা শাহিন মিয়া বলেন, বৃষ্টির কারণে কাঁচা সবজির দাম কিছুটা কম। আমার জীবনের প্রথমবার এতো দাম দেখলাম কাঁচামরিচের। দাম বাড়াতে কাস্টমার ১০/২০ টাকার মরিচ তো কিনতে পারে না। যারা সাধারণ মানুষদের জন্য মরিচ কিনে খাওয়া কষ্ট হয়ে গেছে। 

আরেকজন কাচাঁ সবজি ব্যবসায়ী বলেন, কাঁচা মরিচের দাম বাড়ার কারণে বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছি। এতো দাম দিয়ে কাঁচা মরিচ কিনলেও বিক্রি না করতে পারলে পঁচে যায়। এছাড়া কাঁচা মরিচের দাম বাড়ার কারণে মানুষ কাঁচামরিচ কিনছে না।

কিশোরগঞ্জ জেলা ক্যাবের সভাপতি আলম সারোয়ার টিটু বলেন, সরকার সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিলে বাজার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। অসাধু ব্যবসায়ীরা একেক সময় একেক জিনিসের দাম বাড়িয়ে দিয়ে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করছে। এতে সরকারের যত অর্জন আছে সব ম্লান হয়ে যাচ্ছে। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. আবদুস সাত্তার বলেন, কিশোরগঞ্জে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা কাঁচা মরিচের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে বেশিরভাগ জেলায় মরিচগাছ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিশোরগঞ্জ জেলায় আবাদকৃত অধিকাংশ মরিচ গাছে ফলন নেই বললেই চলে। এর ওপর টানা বৃষ্টিতে মরিচ সংগ্রহের কাজটি কঠিন হয়ে পড়েছে। এই সুযোগে এভাবে কাঁচা মরিচের দাম বাড়াটা অস্বাভাবিক বিষয়।

এ বিষয়ে জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা শিখা বেগমের মোবাইলফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

আরকে